জাতীয় ১৪ মে, ২০২৪ ০১:০৬

এমভি আবদুল্লাহকে বিদায়, জাহান মণিতে চড়ে বন্দরের উদ্দেশ্যে নাবিকেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:  ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরের বিশাল নীল জলরাশি কেটে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া পয়েন্টে নোঙর করা জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে বিদায় জানিয়েছেন জলদস্যুদের হাতি জিম্মি হওয়া সেই ২৩ নাবিক। লাইটারেজ জাহাজ জাহান মণিতে চড়ে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন তাঁরা। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে এমভি আবদুল্লাহকে বিদায় জানিয়ে যাত্রা শুরু করেন নাবিকেরা। 

এর আগে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় কুতুবদিয়া পয়েন্টে জাহাজটি নোঙর করে। আজ মঙ্গলবার রাতে ২৩ নাবিক লাইটারেজ জাহাজে করে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল এনসিটি-১ এ পৌঁছাবেন তারা। যাত্রার এ তথ্যগুলো জানিয়েছেন দেশে ফেরার আনন্দে আত্মহারা নাবিক মো. নুরুদ্দিন। 

এদিকে মালিকপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরেল করিম জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে আসার পর নাবিকেরা যার যার বাড়িতে চলে যাবেন। 

জাহাজে থাকা নাবিক ও দেশে থাকা তাঁদের পরিবারের সদস্যরা প্রিয়জনদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন। নাবিকদের পরিবারে ফিরেছে অন্য রকম স্বস্তি। গত ঈদে এসব পরিবারে আনন্দ না থাকলেও এখন যেন ঈদ আনন্দ পরিবারগুলোতে।

এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে রয়েছেন জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিশিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ এবং ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, মো. নাজমুল হক, আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মো. আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, মো. সালেহ আহমদ, মো. শরিফুল ইসলাম ও মো. নুরুদ্দিন। 

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ বেলা দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুর কবলে পড়ে জাহাজটি। অপহরণের দীর্ঘ এক মাস পর গত ১৩ এপ্রিল সোমালিয়ার সময় রাত ১২টা এবং বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় মুক্তি পায় এমভি আবদুল্লাহ জাহাজসহ ২৩ নাবিক। এর আগে জলদস্যুদের মুক্তিপণের টাকা পৌঁছানো হয় একটি বিশেষ এয়ারক্রাফটের মাধ্যমে। এই এয়ারক্রাফট থেকে দস্যুদের নির্ধারিত স্থানে তিনটি ব্যাগভর্তি ডলার পৌঁছানো হয়। 

মুক্তির পর জাহাজটি ২১ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই আল হারমিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। এরপর গত ২৯ এপ্রিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের আরেক বন্দর মিনা সাকারা থেকে চুনাপাথর নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয় এমভি আবদুল্লাহ। 

এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি কেএসআরএম গ্রুপের এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন। এসআর শিপিং জাহাজটি গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল। এসআর শিপিংয়ের অধীনে মোট ২৪টি জাহাজের মধ্যে সর্বশেষ যুক্ত করা হয় এমভি আবদুল্লাহকে। ২০১৬ সালে তৈরি এই বাল্ক ক্যারিয়ারটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। ড্রাফট ১১ মিটারের কিছু বেশি। গত বছর জাহাজটি এসআর শিপিং কিনে নেওয়ার আগে এটির নাম ছিল গোল্ডেন হক।

আমাদের কাগজ/টিআর