শিক্ষা ১৮ নভেম্বর, ২০১৯ ০৩:৩৩

মুখ দিয়ে লিখে সমাপনী দিচ্ছে লিতুন

ডেস্ক রিপোর্ট।। 

জন্ম থেকেই নেই দুই হাত-পা, মুখের ওপর ভর করে লিখেই পরীক্ষা দিচ্ছে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার লিতুন জিরা। সে এবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষার্থী। লিতুন জিরা যশোরের মনিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। সে উপজেলার খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

জানা গেছে, দুই হাস-পা না থাকলেও সমাজের বোঝা হতে চায় না লিতুন জিরা। লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হয়ে আরো ১০ জনের মতো আত্মনির্ভশীল হতে চায় সে।

লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহী লিতুন জিরা প্রখর মেধাবী। হুইলচেয়ারেই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করত। বর্তমানে হুইলচেয়ারটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা চলাফেরায় কষ্ট হচ্ছে। তার বাবা উপজেলার এআর মহিলা কলেজের প্রভাষক।

তিনি গত ১৭ বছর ধরে ওই কলেজে চাকরি করলেও আজও কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়নি। তার বাবাই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার ওপর বেতন না হওয়ায় হুইলচেয়ার কেনার জন্য বাবাকে বলতে পারছে না লিতুন জিরা। বছর সাতেক আগে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হুইলচেয়ারটি দেয়া হয়। বর্তমানে তার একটি হুইলচেয়ার খুব দরকার।

লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান ও মা জাহানারা বেগম বলেন, জন্মের পর মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা চিন্তা তাদের মাথায়। কিন্তু এখন মেয়ের মেধা তাদের আশার সঞ্চার করছে। লিতুন জিরা আর ১০ জন শিশুর মতো স্বাভাবিকভাবেই খাওয়া-দাওয়া, গোছল সব কিছুই করতে পারে। মুখ দিয়েই লিখে সে। তার চমৎকার হাতের লেখা যে কারো দৃষ্টি কাড়বে।

এ সময় কথা হয় তার সঙ্গে। লিতুনের একটিই ইচ্ছা- লেখাপড়া শিখে নিজেই কিছু করতে চায়।

লিতুন জিরার প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন বলেন, ২৯ বছর শিক্ষকতা জীবনে লিতুন জিরার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর দেখা পাননি। এক কথায় সে অসম্ভব মেধাবী। শুধু লেখাপড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও অন্যদের থেকে অনেক ভালো। সে মডেল টেস্টেও কেন্দ্রে প্রথম হয়েছে।