সারাদেশ ৫ জুলাই, ২০২৫ ১০:৩০

গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ, গোরস্তান থেকে মর্গে মরদেহ

জেলা প্রতিনিধি    
কুষ্টিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৪ জুলাই) সকালে মরদেহ গোরস্তানে নেওয়ার পথে হত্যা সন্দেহে পুলিশ সেটি উদ্ধার করে।

মিরপুর উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের কাঙালী মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত ওই গৃহবধূর নাম শিলা খাতুন (২০)। তিনি একই এলাকার আমিরুল ইসলামের মেয়ে।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও স্বজনরা জানান, দুই বছর আগে দৌলতপুর উপজেলার শেরপুর সেনপাড়া গ্রামের ইয়ারুল ইসলামের ছেলে আলামিনের সঙ্গে শিলার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। ইয়ারুল পেশায় একজন ওয়ার্কশপ মিস্ত্রি। তিন মাস আগে তাদের একটি ছেলে সন্তানও হয়। প্রায় এক সপ্তাহ আগে শ্বশুরবাড়ি থেকে জানায় শিলা শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এরপর কুষ্টিয়া থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যায় শিলার স্বামী তাকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে যায়। রাতে শ্বাসকষ্ট উঠলে পরিবারের লোকজন তাকে ভেড়ামারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখান থেকে বাড়িতে নিয়ে আসা হলে ভোরে শিলা মারা যান।

নিহতের দুলাভাই আশরাফুল ইসলাম বলেন, গত ২৯ জুন ঘটনাটি ঘটে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাদের বলেছিল শিলা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তারাই চিকিৎসা করাচ্ছিল। কিন্তু শিলা মারা যাওয়ার আগে আমাকে বলেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার শরীরে তারপিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। যেহেতু পরিবারের অন্য কেউ বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইনি। তাই আমিও আর কাউকে সে সময় কিছু জানাইনি।

আশরাফুল ইসলাম আরও বলেন, শুক্রবার সকাল ১০টায় স্থানীয় গোরস্থানে শিলার মরদেহ দাফন হওয়ার কথা ছিল। বাড়ি থেকে মরদেহ গোরস্তানে নেওয়ার পথে পৌনে ১০টার দিকে পুলিশ মরদেহ আটকে দেয়। পুলিশ হত্যার অভিযোগের ব্যাপারে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আমি তাদের বিষয়টি জানাই।

এ ব্যাপারে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম বলেন, আসল ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে এমন সন্দেহের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের থামিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। নিহতের দুলাভাই বলছে ভিকটিম মারা যাওয়ার আগে তাকে বলেছে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। নিহতের শরীরের উপরের অংশটুকু পুড়ে গেছে। শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দুই পরিবার একে অপরের আত্মীয়। দাফন না করে আমরা মরদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দিয়েছি। ঘটনাস্থল দৌলতপুর হওয়ায় ওই থানার ওসি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।

এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।