বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেছেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ব্যর্থতা শহীদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। এখনো পর্যন্ত গণহত্যার বিচার হয়নি, আহত-পঙ্গু পরিবারগুলো আজও পথে পথে কান্নাকাটি করছে।”
আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, “আমাদের আজকে অত্যন্ত ব্যথিত হৃদয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হতে হয়েছে। এই সময়ে আমাদের কথা বলার কথা ছিল দেশ পুনর্গঠন ও সংস্কার নিয়ে। কিন্তু আমাদের এখনো কথা বলতে হচ্ছে বিচার না হওয়ার বেদনা নিয়ে।”
‘‘অভ্যুত্থানের দেড় বছর পরও যে শহীদদের রক্তের বিনিময়ে পরিবর্তনের আশা করা হয়েছিল, তা বাস্তবায়িত হয়নি। দায়িত্ব পাওয়ার পরই প্রথম কাজ হওয়া উচিত ছিল পুলিশ লীগ, র্যাব লীগ এবং সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিচারের মাধ্যমে দায় নির্ধারণ করা। কিন্তু একজনেরও বিচার হয়নি। বরং অনেককে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।”
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “দায়িত্ব পাওয়া অনেকেই এখন আর বিপ্লবের ভাষায় কথা বলেন না, বরং সুশীল আচরণের আড়ালে ফ্যাসিবাদী লীগের সুবিধাভোগী শ্রেণিকে পুনর্বাসনের সুযোগ করে দিচ্ছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি, যারা সংস্কারের কথা বলেছিলেন, তাদের মাঝেও শুধু ‘নজরুল ইসলাম থেকে আসিফ নজরুল’–এ রূপান্তর ঘটেছে—সংস্কার নয়।”
বিএনপির ভূমিকারও সমালোচনা করে মুসাদ্দিক বলেন, “২০২৩ সালের অসহযোগ আন্দোলন তারা কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করেনি। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতাতেই এখন তারা জুলাই সনদের বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে। জুলাই সনদ ব্যর্থ করার কোনো ষড়যন্ত্র ছাত্রজনতা মেনে নেবে না।”
তিনি বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে গণভোটের মাধ্যমে। এখানে কোনো ধরনের কম্প্রোমাইজের সুযোগ নেই। জাতীয় নির্বাচনও জুলাই সনদের ভিত্তিতেই হতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত “খুনি লীগ” এবং “জঙ্গি লীগ” আবারও দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির ষড়যন্ত্র করছে। “তারা বিদেশে বসে ভিডিও বার্তা দিচ্ছে, দেশে নাশকতা ও ককটেল হামলার মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, আর প্রশাসনের কিছু ব্যক্তি তাদের ছায়া দিচ্ছেন।
তিনি দাবি করেন, “যদি বিএনপি বা অন্য কোনো দল এমন কর্মকাণ্ড করত, তবে এক ঘণ্টার মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা হতো। কিন্তু এদের ক্ষেত্রে প্রশাসন নীরব।”
মুসাদ্দিক সরকারের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যারা সরকারের অভ্যন্তরে বসে নিষিদ্ধ লীগকে পুনর্বাসনে কাজ করছে, তাদের অবিলম্বে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তাদের একটাই ঠিকানা জেল।”
তিনি ঘোষণা দেন, “খুনি হাসিনার ফাঁসি ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে আগামী ১২ নভেম্বর ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেটে বিভাগীয় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।”
এছাড়া ১৩ নভেম্বর দেশজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সামনে অবস্থান কর্মসূচিরও ঘোষণা দেন তিনি।
ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় সেনা ঘাঁটি স্থাপনের খবর প্রসঙ্গে মুসাদ্দিক সরকারের প্রতি কড়া বার্তা দেন, “পররাষ্ট্র নীতিতে নরম ভাব দেখানোর দিন শেষ। ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে হবে। বাংলাদেশের সীমান্তে যেকোনো সামরিক প্রস্তুতির জবাবে বাংলাদেশকেও সমানভাবে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।”
মুসাদ্দিক বলেন, “জুলাই সনদই দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ভিত্তি। এটি বাস্তবায়ন না হলে ছাত্রজনতা রাজপথে নেমে আসবে।”
- বঙ্গাব্দ, ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ইং, রবিবার
আরো খবর
এইচএসসির খাতা পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ
১৬ নভেম্বর, ২০২৫
৪৯তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, শিক্ষা ক্যাডার হলেন ৬৬৮ জন
১২ নভেম্বর, ২০২৫
সরকারি মেডিকেল কলেজে আসন কমলো ২৮০টি
১০ নভেম্বর, ২০২৫
প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগে আবেদন শুরু আজ
৮ নভেম্বর, ২০২৫
যমুনা অভিমুখে ইবতেদায়ি শিক্ষকদের লংমার্চের ঘোষণা
২ নভেম্বর, ২০২৫
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ দেলোয়ার হোসেন ফারুক
প্রকাশক কর্তৃক শাহ্ আলী টাওয়ার (৬ষ্ঠ তলা), ৩৩ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ থেকে প্রকাশিত এবং ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, সুত্রাপুর, ঢাকা থেকে মুদ্রিত। ফোনঃ ০২-৮১৮০২০২।
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত আমাদের কাগজ (২০১২-২০২০)
















