শিক্ষা ২৫ আগস্ট, ২০২৩ ১১:২৪

চবির হলে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ছবি - সংগৃহীত

ছবি - সংগৃহীত

আমাদের কাগজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক হল ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় আলাওল হলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান ও তালা হল বদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থী। 

তথ্য মতে, গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা ৭টার দিকে হলের ফটকে তালা দেয়া হয়। এরপরে আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে ২নং গেইট এলাকার সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে। এ সময় তারা হলের সামনে প্রধ্যক্ষের পদত্যাগ চেয়ে বারবার স্লোগান দিতে থাকেন।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের আশ্বাসে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আলাওল হলের তালা খুলে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে হলে নানামুখী সমস্যা চলছে। সমস্যার বিষয়ে বারবার হল কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো সুরাহা মিলছে না। তাই তারা প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ চান। 

তবে প্রাধ্যক্ষের দাবি, কয়েকজন শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করায় এই আন্দোলন।

এ ছাড়া বিক্ষোভ চলাকালে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ শিক্ষার্থীরা ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন।

সেগুলো হলো- হলের পানির ট্যাংক নিয়মিত পরিষ্কার করা, গোসলের জন্য নির্মিত হাউস (ছোট সুইমিংপুল) নিয়মিত পরিষ্কার রাখা, ইন্টারনেটের সেবা নিশ্চিত করা, খেলাধুলার সরঞ্জাম নিশ্চিত করা, হলের চারপাশ পরিষ্কার রাখা, চলমান সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করা, হলের কর্মচারীদের কাজের তদারক করা এবং কর্মচারীদের গাফিলতির জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া।

তালা দেওয়ার বিষয়ে ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইকো হিমাদ্র বলেন, আমরা যারা আলাওল হলে থাকি, তারা বিভিন্ন সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছি। বিশুদ্ধ পানি নেই, হলের ওয়াই-ফাই সমস্যা, আমাদের হলের প্রত্যেকেরই কক্ষে দরজা-জানালা ভাঙা। প্রাধ্যক্ষের কাছে বারবার অভিযোগ দিলেও আমরা সুফল পাচ্ছি না।

জানতে চাইলে বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করা সমাজতত্ত্ব বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তানভীর আলম গণমাধ্যমকে বলেন, হলের সমস্যাগুলো দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষকে একাধিকবার জানানো হলেও তিনি ব্যবস্থা নেননি।

তবে আলাওল হলের প্রাধ্যক্ষ ফরিদুল আলম বলেন, এখানে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের একটা বিষয় আছে। জানুয়ারি মাসে আমরা বেশ কয়েকজনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছি। এখানে কয়েকটা ছেলে সাজা মওকুফের জন্য আবেদন করে, যারা এই হলে থাকে। আমি ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য। কমিটি তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাজা পুনর্বিবেচনা করে সাজা ৫০ শতাংশ মওকুফ করে। কারও কারও ক্ষেত্রে এই সাজার মধ্যেই বিভাগের পরীক্ষা হয়েছে, তাই তাদের ফলাফল হচ্ছে না।

শিক্ষার্থীরা পুরো সাজা মাফ চাচ্ছেন বলে জানিয়ে প্রাধ্যক্ষ ফরিদুল বলেন, আজও সব বিবেচনা করে তাদের শাস্তির বিষয়ে বহিষ্কার আদেশ বহাল রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এই জন্যই তারা আন্দোলন করছেন। আজকে তাদের সাজা মাফ করলে এই আন্দোলন তারা করত না।

প্রাধ্যক্ষ ফরিদুল আরও বলেন, এর আগে শিক্ষার্থীদের দাবির ভিত্তিতে সমস্যাগুলো সমাধান করা হয়েছে। এখন কোনো সমস্যা নেই। আমার পদের কোনো প্রয়োজন নেই। তবে অন্যায়ের কাছে মাথানত করব না।

প্রসঙ্গত, গত ৯ জানুয়ারি ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ ইলিয়াছের নেতৃত্বাধীন বিজয় উপপক্ষের ১২ নেতা-কর্মীকে সাংবাদিক হেনস্তা, আবাসিক হলে ভাঙচুর, ছাত্রী হলে মারামারিসহ পৃথক ছয়টি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ।

আমাদের কাগজ/ এমটি