নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের একটি অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। ক্ষমতার অপব্যবহার, নিয়োগ ও টেন্ডার বাণিজ্য, ঘুসগ্রহণসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে এজাজের বিরুদ্ধে। অভিযোগটি যাচাই শেষে বৃহস্পতিবার অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। বৃহস্পতিবারই অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য দুদকের তদন্ত-১ শাখাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সমকালকে বলেন, ডিএনসিসির প্রশাসকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জানা গেছে, প্রশাসক এজাজের বিরুদ্ধে অভিযোগটি জমা হওয়ার পর দুদকের গোয়েন্দা ইউনিট গোপনে অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধানে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির আমলযোগ্য তথ্য-প্রমাণ মিলেছে।
অভিযোগের বিষয়ে প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের বক্তব্য জানার জন্য তাঁর মোবাইল ফোনে বার বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।
দুদকে জমা দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, মোহাম্মদ এজাজ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ডিএনসিসির প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন। এর পর থেকেই তিনি সেখানে স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতির সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে পদোন্নতি, দায়িত্ব বণ্টন, নিয়োগ ও বদলি নিয়ে বাণিজ্য চলছে। ডিএনসিসিতে কোটি কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজের টেন্ডার, বড় অঙ্কের ক্রয়ে কর্তৃত্ব রয়েছে এই প্রশাসকের। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী গাবতলী পশুর হাটসহ অন্যান্য অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাটের ইজারা দেওয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়, সরকারি যেসব খালসহ অন্যান্য সম্পত্তি বেদখল হয়েছে, সেগুলো দখলে রাখতে ডিএনসিসি থেকে সহায়তা করা হচ্ছে। এর বিনিময়ে প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা (উপসচিব) মোহাম্মদ শওকত ওসমানকে ম্যানেজ করে দখলবাজদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সরকারি খালের জমি দখল করে একাধিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। মোটা অঙ্কের অর্থ সেলামি নিয়ে ওইসব ভবন হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের ইচ্ছার বাইরে ডিএনসিসিতে কিছুই হয় না। এতে সরকারের বিধি লঙ্ঘন হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা উঠলে কর্তৃত্ব খাটিয়ে চেপে রাখা হয়। ওই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অনিয়ম, নানা দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং কোটি কোটি টাকার টেন্ডার বাণিজ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মী এবং ব্যবসায়ীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা শওকত ওসমান ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমানের সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম।
মোহাম্মদ এজাজ গত ১২ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পান। এর পেছনে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের একজনের স্বজনপ্রীতি রয়েছে বলে জানা যায়। ৪০ কোটি টাকার বিনিময়ে প্রশাসক হিসেবে তিনি নিয়োগ পান–এ কথাও দুদকে জমা দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ আছে।






















