অপরাধ ও দুর্নীতি ৩ আগস্ট, ২০১৯ ০৫:০৩

পকেট কাটার উদ্দেশ্যে হজ্ব

ডেস্ক রিপোর্ট ।। 

ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যভূমি সৌদি আরবের মক্কা-মদিনা। সারা বিশ্বের মুসলমানরা ছুটে যান পাপমোচন কিংবা পুণ্য অর্জনের আশায়। সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এক চক্রের সন্ধান পেয়েছে, যারা প্রতি বছর হজের মৌসুমে দুই মাসের জন্য সৌদি আরবে পাড়ি জমায়। তবে হজ পালন তাদের উদ্দেশ্য নয়, বিভিন্ন দেশ থেকে আসা হাজিদের ‘পকেট কাটাই’ তাদের লক্ষ্য।

ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মহররম আলী বলেন, সম্প্রতি পকেট কাটায় দক্ষ ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই হজ্ব মৌসুমে মক্কা ও মদিনায় গিয়ে হাজিবেশে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা হজ্ব পালনকারীদের পকেট কাটতো। এছাড়া বাকি সময়ে তারা রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় বিদেশফেরত যাত্রীদের অর্থ, মোবাইল ও ব্যাগ চুরি করতো।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে ২৪ লাখ টাকার সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রাসহ সৌদি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল এই চক্রের মূলহোতা মাসুদুল হক ওরফে আপেল (৪৩)। সেখানে তিন মাস কারাভোগ শেষে দেশে ফিরে সে নতুন পাসপোর্ট তৈরি করে। দলে ভেড়ায় আরও ১১ জনকে। আপেলসহ তাদের ছয়জন গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। বাকিরা হলো সুমন ভূঁইয়া ওরফে সোমা (৩৬), রুহুল কুদ্দুস (৪৮), লাবু মিয়া (৩২), জাহিদুল ইসলাম ওরফে জাহিদ (২৮) ও দুলাল মোল্লা (৫০)। কারাগারে পাঠানোর আগে জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেছে। তারা হলো সজীব (৩০), ওমর (৩২), শহিদুল্লাহ (৩০), তাজু (৩৫), তুলু (৩৬) ও জামাল(৩৩)।

ডিবির আরেক কর্মকর্তা বলেন, এবারও তারা হজযাত্রী হিসেবে সৌদি আরবে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত শনিবার রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে চক্রের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী সময়ে তারা জিজ্ঞাসাবাদে হাজিদের পকেট কাটার বিষয়টি স্বীকার করে। পরে গত সোমবার আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

এডিসি মহররম আলী বলেন, ‘গ্রেপ্তার এই চক্রের সদস্যদের ব্যবহৃত পাসপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। পলাতক সদস্যরা তাদের সবার পাসপোর্ট নিয়ে গেছে বলে জানতে পেরেছি। অন্যদের ধরতে পারলে তাদের পাসপোর্ট উদ্ধার করা যাবে।’

পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফের সময়, আরাফাত ময়দানে অবস্থান এবং মিনায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের সময়ও হাজিদের পকেট কেটেছে তারা। এমনকি মসজিদে নববির মতো পবিত্র এলাকায়ও হাজিদের দামি জিনিসপত্র চুরি করা বাদ যায়নি। চক্রের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য মিলেছে বলে জানিয়েছেন ডিবির কর্মকর্তারা।