অপরাধ ও দুর্নীতি ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০২:৪২

বিদেশে বসেই টেন্ডার মাফিয়াদের নিয়ন্ত্রণ করছেন তারেক

ডেস্ক রিপোর্ট ।।

একযুগ ধরে ক্ষমতায় নেই, ১১ বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। কিন্তু ঢাকার টেন্ডারবাণিজ্য এখনও নিয়ন্ত্রণ করছে তারেক জিয়া। তারেক জিয়ার ক্যাডাররাই এখন টেন্ডার মাফিয়া। তারা আওয়ামী লীগার হয়ে টেন্ডারবাণিজ্য করে চলেছে। এছাড়াও তারা একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করছে বিভিন্ন সেক্টরে। সাম্প্রতিক গণপূর্তের টেন্ডারমাফিয়া জি কে শামীমকে গ্রেপ্তারের পর এ ধরনের চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে।

জি কে শামীম জানিয়েছে, গণপূর্তের টেন্ডার নয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ টেন্ডারগুলোতে যারা হর্তাকর্তা তারা তারেক জিয়ার লোক। জি কে শামীম একসময় যুবদল করতেন, তারপরে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগে যোগ দিলেও তিনি গোপনে বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। গোপনে তিনি তারেক জিয়ার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছিলেন। এই সাম্রাজ্যের সব খবরাখবর তারেক জিয়া রাখতেন এবং তারেক জিয়ার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল জি কে শামীমের।

জি কে শামীমের হাতে বর্তমানে তিন হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন সরকারী কাজ ছিল। গণপূর্ত বিভাগের যেকোনো কাজ যে জি কে শামীমের জি কে বিল্ডার্স পাবে তা মোটামুটি নিশ্চিত ছিল। এমন একটা নেটওয়ার্ক শামীম বিস্তার করেছিলেন যেন তাকে বাদ দিয়ে কাজ করার কোন উপায় থাকে না।

গোয়েন্দাদের কাছে জি কে শামীম জানিয়েছেন, শিক্ষা ভবনের কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন  শফিকুল ইসলাম। তিনিও এখন যুবলীগের আইসিটি বিষয়ক সম্পাদক। তিনিও ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। তার সঙ্গেও তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। শফিকুল ইসলামের প্রতিষ্ঠান শফিক এন্টারপ্রাইজ শিক্ষা ভবনের সমস্ত কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করেন। তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে শিক্ষা ভবনের কোনো কাজ হয়না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন একজন ব্যবসায়ী, ২০০৯ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যার উত্থান হয়। আওয়ামী লীগ না করলেও ওই ব্যবসায়ী এখনও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমস্ত ব্যবসার একচ্ছত্র অধিপতি। তাঁর ইশারা ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কোনো কাজ হয়না। তাঁর সঙ্গেও তারেক জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

এছাড়াও ঢাকার শীর্ষ দশ ঠিকাদাররাই তারেকের নিয়ন্ত্রণে। তারা তারেককে নিয়মিতভাবে টাকা পাঠায়। এরা রাতদিন আওয়ামী লীগের কথা বললেও গোপনে এরা বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক রাখে। তারেকের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে। মূলত, এদের পাঠানো টাকার মাধ্যমেই তারেক জিয়া লন্ডনে আরাম আয়েশের জীবনযাপন করেন।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলছে যে, টেন্ডারচক্রের নেটওয়ার্ক যদি ভাঙতে পারা না যায় তাহলে বিএনপির জঙ্গি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, লুণ্ঠনকারীদেরকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে না। এই সমস্ত সন্ত্রাস, অনৈতিক কর্মকান্ডের গডফাদার হলেন তারেক। ক্ষমতাচ্যুত হলেও তাঁর টেন্ডার নেটওয়ার্ককে গোয়েন্দারা অনেকটা মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের নেটওয়ার্কের সঙ্গে তুলনা করেছেন। দাউদ ইব্রাহিম যেমন দীর্ঘদিন ভারতের বাইরে থেকেও ভারতের আন্ডারওয়ার্ল্ডকে নিয়ন্ত্রণ করে ঠিক তেমনিভাবে তারেক জিয়া দীর্ঘদিন ঢাকার বাইরে থেকে দু'টি মামলায় দণ্ডিত হয়েও এখনও অবৈধ বাণিজ্য, টেন্ডারবাণিজ্যসহ আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করেন। তারেকই হলেন এইসমস্ত টেন্ডাবাজদের গডফাদার।