অপরাধ ও দুর্নীতি ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০৫:০৩

'যৌন প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় তিনদিন খেতে দেয়নি'

ডেস্ক রিপোর্ট।। 

কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যাওয়া ৮১ জনই নারী শ্রমিক দেশে ফেরত এসেছেন। তাদের সবাই দালালদের প্রতারণার শিকার হয়েছেন। 

এ সপ্তাহে ফিরে আসা এক নারী শ্রমিকদের সাথে কথা  বললে জানায়, মৌলভীবাজারের বাসিন্দা আমেনা বেগম (নাম পরিবর্তিত) সৌদি আরবের রিয়াদে প্রায় দেড় বছর ছিলেন, যার মধ্যে ৫ মাসই তাকে কাটাতে হয় পুলিশের হেফাজতে। সেখানে যৌন প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি।

তিনি আরো জানান, যৌন প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় টানা তিনদিন আমাকে খেতে দেয়া হয়নি। একপর্যায়ে মেরে হাত ভেঙে দেয়া হয় এবং বাসা থেকে বের করে দেয়া হয়। তারপর বাসার সামনে গভীর রাতে পুলিশ আমাকে পায় এবং থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সুস্থ হওয়ার পর এজেন্টের মাধ্যমে ঐ বাড়িতেই ফিরে যেতে বাধ্য করা হয় ।  আর সে বাসায় ফিরে যাওয়ার পরে  বেশ কিছুদিন আমার উপরে শারীরিক অত্যাচার এবং যৌন নির্যাতন চালানো হয়। শারীরিক অত্যাচারের পর একপর্যায়ে  আবারো  বাসা থেকে বের করে  দেয়। এবার পুলিশ আমাকে তাদের হেজাজতে নিয়ে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করে দেয়। তবে এখানেও আমাকে যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়। তিন দিন একাধিক পুলিশ আমার উপরে নির্যাতন চায়। 

বাসিন্দা আমেনা বেগম (নাম পরিবর্তিত) ২৫ বছর বয়সী এই নারী দালালের মাধ্যমে সৌদি আরব যাওয়ার পর গৃহকর্মীর কাজ করতে হলেও তাকে বলা হয়েছে তাকে একটা মেডিক্যালে কাজ করার কথা বলা হয়েছিল। 

আমেনা বেগম জানান, সৌদি আরব যাওয়ার জন্য দালালকে এক লক্ষ টাকা দিতে হয় তাকে। কিন্তু সেখান থেকে ফেরার সময় তাকে ফিরতে হয় খালি হাতে।

"বাবা-মা সুদে টাকা ধার নিয়ে আমাকে সৌদি পাঠিয়েছিল। সেখানে সব নির্যাতন, অত্যাচার সহ্য করেও কাজ করতাম টাকার জন্য।"

"কিন্তু টাকা চাইলেই আমার ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হতো। একবছর কাজ করলেও শেষপর্যন্ত দুইমাসের আংশিক বেতন দেয়া হয় আমাকে।"

আমেনা বেগমের সাথে ফেরত আসা নারীদের একজন ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার ফাতেমা বানু (নাম পরিবর্তিত)। সৌদি আরবে তার গল্পটাও অনেকটা একই রকম।

গহকর্মীর কাজ করতে গিয়ে একপর্যায়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লেও তার চিকিৎসা করাতে অস্বীকৃতি জানায় গৃহকর্তা।

এরপর তাকে জোর করে মাদক সেবন করিয়ে ঘরে আটকে রাখা হয়। মাদক সেবনের কারণে একপর্যায়ে তার মানসিক সমস্যাও তৈরি হয় বলে জানান এই নারী।