ডেস্ক রিপোর্ট।।
বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় পুনরায় নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছেন পুলিশ।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করা হয়। চার্জশিটে রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। একই সঙ্গে এই চার্জশিটে রিফাত হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
রিফাত হত্যা মামলায় গত ২২ আগস্ট আদালতে চার্জশিট জমা দেয়ার দিন ধার্য ছিল। সেদিন মামলার প্রতিবেদন তৈরি করতে না পারায় আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হয়নি। আগামী ৩রা সেপ্টেম্বর এ মামলার চার্জশিট দাখিলের দিন ধার্য করেন আদালত। কিন্তু এরই মধ্যে তড়িঘড়ি করে রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) আদালতে চার্জশিট জমা দেন পুলিশ।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ দুই শর্তে মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন। কিন্তু এরই মধ্যে রবিবার হাইকোর্টে জামিন পাওয়া রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
আলোচিত এ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছেন পুলিশ। তারা হলেন- রিফাত ফরাজী, রিশান ফরাজী, চন্দন সরকার, রাব্বি আকন, হাসান, অলি, টিকটক হৃদয়, সাগর, কামরুল ইসলাম সাইমুন, আরিয়ান শ্রাবণ, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, তানভীর, নাজমুল হাসান, রাতুল সিকদার ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।
তবে মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি মুসা বন্ড, ৭ নম্বর আসামি মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, ৮ নম্বর আসামি রায়হান ও ১০ নম্বর আসামি রিফাত হাওলাদারকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তারা এখনও পলাতক আছে বলে জানা যায়। এছাড়াও এ মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে এক বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন সকালে প্রকাশ্য দিবালোকে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে রিফাতকে কুপিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান রিফাত। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে, সিসিটিভি'র ফুটেজ দেখে সন্দেহ হলে মামলার প্রধান সাক্ষী মিন্নিকে গত ১৬ জুলাই মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যান পুলিশ। দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় মিন্নিকে গ্রেফতার করেন পুলিশ। পরদিন তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। গ্রেফতারের দু'দিন পরে মিন্নিকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
এ ঘটনায় বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন।
এর পরদিন বিকেলে মিন্নি একই আদালতে তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।






















