বিনোদন ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০২:৫৩

ছাত্রীদের নেকাব খুলতে বাধ্য করলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকা 

আমাদের কাগজ ডেস্ক: সম্প্রতি ক্লাস চলাকালে শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীদের নেকাব খুলতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি  গত ৪ ডিসেম্বরের। যদিও আইডেন্টিফাই করতে এমনটি করেছেন বলে দাবী ওই শিক্ষিকার। 

ঘটনার পর রোববার ১০ ডিসেম্বর এক নারী শিক্ষার্থী নেকাব খুলতে বাধ্য করা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত ওই শিক্ষিকা (কুন্তলা চৌধুরী) যিনি বর্তমানে জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। 

অভিযোগপত্রে নেকাব না খুললে প্রেজেন্টেশন ও পরীক্ষায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন শিক্ষিকা কুন্তলা চৌধুরী, এমনটি জানানো হয়েছে। শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ছাত্রী অভিযোগ করে বলেছেন, ম্যাডামের এমন আচরণ দেশের সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। একইসঙ্গে স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনে বাধা প্রদান ও পোশাকে স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের শামিল। তাই আমি যেভাবে ধর্ম পালনে বাধা ও হয়রানির শিকার হয়েছি, আর কেউ এমন হয়রানির শিকার যেন না হয় সেটাই চাই।

অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী জানান, অনেকে ম্যাডামের কথা মতো ভয়ে নেকাব খুললেও ওই ছাত্রী ভয় পেয়েও নেকাব খুলেননি। ওই ছাত্রী প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছিলেন, ম্যাডাম ক্লাস শুরুর আগে বাইরে কোথাও বা অফিস রুমে তাদের আইডেন্টিফাই করতে পারেন।

‘তখন অধ্যাপক কুন্তলা চৌধুরী বলেছিলেন, বাইরে কোথায় আইডেন্টিফাই করবো? তোমার বাসায়? এরপরে ওই ছাত্রী আর কিছু বলেননি। কিছুক্ষণ পড়ানোর পর ম্যাম যখন দেখলেন ওই ছাত্রী নেকাব খুলছেই না। তখন তিনি ওই ছাত্রীকে বলেছিলেন, তোমার যদি নেকাব খুলতে এতই সমস্যা হয় তাহলে মুখ ঢেকেই ক্লাস করতে পার কিন্তু আমার প্রেজেন্টেশন ও পরীক্ষায় তোমাকে মুখ খুলতেই হবে। পরে তিনি ক্লাসের পরে উনার সঙ্গে দেখা করতে বলেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেরোবি শিক্ষিকা কুন্তলা চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, আমি ওই ছাত্রীকে নেকাব করতে নিষেধ করিনি। আমি বলেছি যে, তোমার চেহারা না দেখলে বুঝবো কিভাবে যে তুমি আমার শিক্ষার্থী। 

কুন্তলা চৌধুরী আরও বলেন, আমি ধর্ম পালনে কাউকে নিষেধ করতে পারি না। আমাদের এত বড় একটি বিশ্ববিদ্যালয় সেখানে অন্য বিভাগ থেকেও শিক্ষার্থীরা আসতে পারে। আমরা ক্লাসে অনেক কিছুই পড়াই সে বুঝতে না পেরে সেটার মিসইন্টারপ্রেট করলো। তা তো হতে পারে না। কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু না হয় তাই আমি আইডেন্টিফিকেশনের জন্য শুধু চেহারাটা দেখতে চেয়েছি আর কিছুই নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র উপদেষ্টা সৈয়দ আনোয়ারুল আজিম অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। আমাদের একটু সময় লাগবে। এই মুহূর্তে এর থেকে বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।

ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের প্রথম বর্ষের (১৫ তম ব্যাচের) ছাত্রী

আমাদেরকাগজ/এমটি