বিনোদন ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০৬:১৭

‘ভয়ে ছিলাম কখন যে গুলিটা লাগবে আমার গায়ে’

ডেস্ক রিপোর্ট।। 

গোলাম সোহরাব দোদুলের পরিচালনায় ‘সাপলুডু’সিনেমাটি  ২৭ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেতে যাচ্ছে। সিনেমার অন্যতম মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরেফিন শুভ। সিনেমা মুক্তির আগে এক সাক্ষাকারে কেন্দ্রীয় চরিত্রে কাজ করা আরেফিন শুভ  জানান, 
 
‘সাপলুডু’ সিনেমাটি নির্মাণের শুরু থেকেই নানা কারণে আলোচিত। আরেফিন শুভ ও বিদ্যা সিনহা সাহা মিম দীর্ঘদিন পর জুটি হলেন। গোলাম সোহরাব দোদুল দীর্ঘদিন ধরে ছোটপর্দায় প্রশংসিত নাটক- টেলিফিল্ম নির্মাণ করছেন। তার প্রথম ছবি। এর কাস্টিংও ছিল সিনেমাটির অন্যতম চমক। তারিক আনাম খান, জাহিদ হাসান, সালাহউদ্দিন লাভলু, ইন্তেখাব দিনার, শতাব্দী ওয়াদুদ, রুনা খান, সুষমা সরকার, মারজুক রাসেল, শাহেদ আলীসহ অনেকেই আছেন ছবিতে। এগুলো সিনেমাটি পছন্দ করার ক্ষেত্রে এটা ছিল প্রথম ও প্রধান কারণ।

সিনেমাটির প্রমোশন শুরু হলো ছবি মুক্তির সপ্তাহ খানেক আগে। তা নিয়ে অনেকের সমালোচনাও ছিল..

আমরা আসলে সবকিছু মিলিয়ে সময়টা করে উঠতে পারিনি। আমরা রেডি ছিলাম। সিনেমাটির প্রমোশন আমরা কতটা করেছি। সেখানে পাশ করেছি না ফেল করেছি। তার চেয়ে বলবো যে আমরা সিনেমাটিতে পাশ করেছি। আমরা যে ভালো একটা গল্প বলতে চেয়েছি। সেটা আমরা পর্দায় দেখাতে পারবো। আর আমাদের প্রমোশন তো চলছে। সিনেমাটিও তো হলে ২৭ তারিখ উঠবে। তারপর তো চলতে থাকবে। আমরা আরো প্রমোশন করবো।

ট্রেলারেই বোঝা গেছে থ্রিলার টাইপ গল্প। কতটা থ্রিল পাবে দর্শক?

কি হবে কি হবে। কি হচ্ছে। গোটাটা সময়ই দর্শকের চোখ রাখতে হবে পর্দায়। কারণ কোন সিকোয়েন্স মিস দেওয়া মানে গল্প থেকে ছিটকে যাবে। এমন টাফ একটা থ্রিলার এটি। আর এই থ্রিলটায় গল্প যেমন ছিল, তেমনি অভিনয়শিল্পীদের অভিনয়। পুরোটা সময় দর্শক একটা ঘোরের মধ্যে থাকবে বলে আমার বিশ^াস। একটা সিনেমা দেখে অনেকের কাছেই অনেক প্রশ্নের তীর যাবে।

সিনেমাটি কেন দেখবে মানুষ?

অনেক অভিনেতা। অনেক বড় বাজেট। অনেক ডিফারেন্ট লোকেশন। সেটা সিনেমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা টেকনাফের বার্মা বর্ডারে কাজ করেছি। যেটা একদমই অ্যালার্মিং। রোহিঙ্গা ইস্যুর সময় গত বছর আমরা শ্যুট করেছি। ছবির ট্রেলারেই বোঝা গেছে যে আমরা লোকেশন নিয়ে কত খেটেছি। কতটা গুরুত্ব দিয়েছি গল্প বলার ক্ষেত্রে। আমাদের সিনেমার বাজারের যে অবস্থা। সেখানে এত বড় মাপের শিল্পীর লিস্ট রয়েছে এখানে। এখন তো শুধু নায়ক নায়িকা দিয়েই সিনেমা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এখানে যারা আছেন তারা আমাদের দেশের অভিনয়ের জন্যে বা জনপ্রিয়তা আছে তাদের লিস্ট যদি চাওয়া হয়। এরা সবাই সেখানে শুরুর দিকে থাকবে। এটা সিনের জন্যও যদি হয় সেখানে পরিচালক একজন অভিনেতাকেই এনে দাড় করিয়েছেন। যিনি কোন না কোন জায়গায় পরীক্ষিত। পরিচালক কোন দৃশ্য নিয়েই কম্প্রোমাইজ করেনি।’

বার্মা বর্ডারে শুটিং করেছেন। কেমন অভিজ্ঞতা ছিল?

সেখানে ফোনের নেটওয়ার্ক ছিল না। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েই শুটিং করতে হয়েছে। পৃথিবী থেকে বের হয়ে শুধু শুটিংয়েই ছিলাম। ওই সময় নাফ নদীর ওপর অনেক নজরদারী ছিল। পরিচালক ওই নদীতেই শর্ট নিবে বলে ঠিক করলেন। তিনি বোঝালেন ওই শর্টটা সিনেমার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি না করতে পারলাম না ডিরেক্টরকে। ওই পাশ দিয়ে বর্ডার গার্ডও গুলি করে দিতে পারে। নৌকায় দাড়ানো আমি। বাকি টিম নৌকার ভিতরে বসা। যেখানে বাইরে থেকে মনে হবে শুধু একটা লোক দাড়ানো। আমি শর্টের সময় শুধু সৃষ্টিকর্তার নাম নিচ্ছিলাম কখন যে গুলিটা আসবে আর আমার গায়ে লাগবে। শেষমেষ আসলে ওরকম কিছু হয়নি। সেদিন ভাবছিলাম মরেই যাবো।

শুভ এবং মিম জুটি কেমন হলো?

এরকমভাবে আগে কেউ দেখেনি। এরকম গেটআপ, ডায়লগ ডেলিভারি, কেমিস্ট্রি আগে কেউ দেখায়নি। এই সিনেমার যে বাঘা বাঘা অভিনয়শিল্পী ছিলেন। তারা সিনেমাটি দেখে আমাদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তাদের কাছ থেকে প্রশংসা পাওয়া মানেই তো অনেক কিছু।

সিনেমায় আপনার চরিত্রটা কী?

চরিত্রের নাম আরমান। পাশের বাসার গল্পও বলা যেতে পারে। পাশের বাসার ছেলেটিরই এক ধরনের সিম্বলিক কম্মিনেশন বলা যেতে পারে। যারা সমাজের বিভিন্ন ট্রাপে পড়ে যায়। সেই ট্রাপগুলো কি সেটা দেখতে হলে যেতে হবে। মিমের চরিত্রটার নাম পুস্প। যে খুবই সাধারণ একটি মেয়ে। কিন্তু তার লাইফে অনেক স্ট্রাগল থাকে। ছবিটি তার স্ট্রাগল দিয়েই শুরু হয়।

গানে বিশেষ নজড় দেওয়া হয়েছে নাকি?

এর গানগুলো নিয়ে আলাদা করে বলতেই হয়। ইমন সাহা, বাপ্পা মজুমদার, ইমরান, কনা, পড়শী, হৃদয়ের মতো শিল্পীরা আছেন। আর কাকে চাই।

বর্তমান ব্যস্ততা কী?

‘জ্যাম’র শুটিং চলছে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। তারপর সাপলুডু দেশের বাইরে মুক্তি পাবে। সবগুলো দেশ ঘুরতে পারবো না। আমি হয়তো ইটালি আর আমেরিকায় টিমের সঙ্গে থাকবো। ফিরে এসে ‘মিশন এক্সট্রিম’র কিছু দৃশ্য বাকি আছে। সেটার প্রস্তুতি শুরু হবে। নভেম্বরে দেশে ফেরা হবে। ডিসেম্বরে মিশন এক্সট্রিমের শেষ কাজটুকু। সিনেমাটি আগামী বছরের প্রথম দিকেই মুক্তি পাবে। তার মধ্যে আরো একটি প্রজেক্টের সঙ্গে কথা হচ্ছে। প্রায় ফাইনাল। সেটার কাজ জানুয়ারিতে শুরু করবো। কলকাতায় কিছু প্রজেক্টে কথা চলছে।