বিনোদন ডেস্ক
চলচ্চিত্র শিল্পীদের জন্য সরকার কর্তৃক কল্যাণ তহবিল গঠনের পর এবার একই দাবি জানিয়েছেন টেলিভিশন অভিনয়শিল্পীরা। আজ রাজধানীর নিকেতনে ছোট পর্দার শিল্পীদের সংগঠন অভিনয় শিল্পী সংঘের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এমন দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী সংঘের উপদেষ্টা বরেণ্য অভিনেতা মামুনুর রশিদ, সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান ও প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রাণ রায়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম বলেন, ‘বিগত ২৫ বছর ধরে যাঁরা অভিনয়শিল্পকে এবং টেলিভিশন নাটককে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন, তাঁরা আজ অনেকেই শারীরিক অসুস্থতা ও বার্ধক্যজনিত কারণে নিয়মিত কাজ করতে পারছেন না। তাঁরা বিপর্যস্ত জীবনযাপন করছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর মতো বা আর্থিক সহযোগিতা করার মতো সরকারি, বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান নেই, যাতে করে যাঁরা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়টাকে অভিনয়শিল্প তথা নাটকের মধ্যে নিবেদন করেছেন, আজ তাঁরা অসহায়, নিঃস্ব হয়ে জীবনযাপন করছেন। তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা বা তাঁদের জীবনকে বহন করার মতো সক্ষমতা আর তাঁদের নেই। প্রায় প্রতিটি দেশেই শিল্পী ও কলাকুশলীদের জন্য কল্যাণ তহবিল থাকে। আমাদের দেশেও একটি রয়েছে, সেটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিল্পী কল্যাণ তহবিল। কিন্তু সেখানে টেলিভিশন শিল্পীদের ব্যাপারে কোনো উল্লেখ নেই, যদিও সেখানে অভিনয়শিল্পী উল্লেখ আছে। কিন্তু আমরা এই করোনা মহামারিতে লক্ষ করলাম, কোনো মন্ত্রণালয় থেকেই টেলিভিশনের শিল্পী ও কলাকুশলীদের জন্য কোনো প্রকার বরাদ্দ দেওয়া হয়নি এবং পাওয়া যায়নি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, ‘তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা একাধিক বৈঠক করেছি এবং আমরা আমাদের পেশার নিরাপত্তার জন্য অনেক দাবি জানিয়েছিলাম, ডাবিং সিরিয়াল প্রচারে নীতিমালা প্রণয়ন, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা বাস্তবায়ন, আমাদের পেশার স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি কল্যাণ তহবিল গঠন এবং টেলিভিশন শিল্পীদের জন্য যে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট রয়েছে, তা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ, তথ্য মন্ত্রণালয় আমাদের আশ্বস্ত করেছিল, তারা বিষয়গুলো দেখবে এবং দাবিগুলো সমাধান করবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেসবের কোনো অগ্রগতি লক্ষ করছি না।’
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে, ‘বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক মাধ্যমের শিল্প-সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে অবশ্যই অভিনয়শিল্পী এবং কলাকুশলীদের অনুপ্রেরণা জোগাতে হবে এবং তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে যথাসম্ভব তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি কল্যাণ তহবিল গঠন করা হোক। কল্যাণ তহবিলের ধরন এমন হওয়া উচিত, ৬৫ বছর বয়স্ক শিল্পীদের জন্য মাসিক ভাতা প্রদান, দুর্ঘটনায় আহত বা দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত শিল্পীদের জন্য চিকিৎসা ভাতা প্রদান, শারীরিক ও মানসিক বিপর্যয়ের কারণে কর্মে অক্ষম শিল্পীদের মাসিক ভাতা প্রদান, কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে এককালীন বরাদ্দ, হতে পারে প্রতি অর্থবছরে সরকার কর্তৃক একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ।’
আর এ লিখিত বক্তব্যের শেষে জানানো হয়, ‘আমরা আজকের এই প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, অন্যথায় আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি আদায়ের পথে এগিয়ে যেতে হবে। শিল্প-সংস্কৃতি বিকাশের নিমিত্তে টেলিভিশন শিল্পী কল্যাণ তহবিল গঠন করার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি।’






















