আন্তর্জাতিক ১৫ অক্টোবর, ২০১৯ ১১:২২

ছাত্র আন্দোলন করে জেলে খেটেছিলেন নোবেলজয়ী অভিজিৎ

ডেস্ক রিপোর্ট।। 

অর্থনীতিতে দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে নোবেল পুরস্কারের সন্মানে ভূষিত হয়েছেন অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার এই সাফল্যে আন্দোলিত ভারতসহ বাংলাদেশের মানুষও। তার জীবন নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে নতুন করে। আর সেকারণেই সামনে চলে আসছে অভিজিতের ছাত্র জীবনের গল্পও।

বিশ্বের সবচেয়ে সন্মানজনক পদকে ভূষিত অভিজিৎ শৈশব থেকেই বিভিন্ন অন্যায় আর বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেছেন। আর এমনই প্রতিবাদ করতে গিয়ে তাকে জেলও খাটতে হয়েছিলো। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলন করাতে তার বিরুদ্ধে খুনের প্রচেষ্টার অভিযোগ এনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো।

২০১৬ সালে এই আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বর স্বাক্ষাতকার নিয়েছিলো ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস। সেই স্বাক্ষাতকারে তখন জওহরলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দেশদ্রোহী বলে গ্রেপ্তার ও নানা হয়রানির বিষয়টি সামনে আনা হলে অভিজিৎ তার সময়কার আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এই তথ্য দেন।

অভিজিৎ বলেন, ‘১৯৮৩-তে আমাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়নি ঠিকই। তবে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।’

অভিজিৎ ওই সক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘১৯৮৩ সালে জওহর লাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া বদলানোর দাবিতে আন্দোলন হচ্ছিল। ফি এতটাই বাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল যে তা সামলানো গ্রামীণ এলাকা থেকে পড়তে আসা ছেলেমেয়েদের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ছাত্র সংসদ এর প্রতিবাদ করায় সংসদ সভাপতিকে বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তখনই ছাত্র আন্দোলন আরো তীব্র হয়। সেই আন্দোলন দমন করতেই পুলিশ ঢোকে ক্যাম্পাসে। আমাদের মারতে মারতে জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সন্দেহ নেই এতে রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদত ছিল। তারা বলেছিল- তারা বস। তাদের কথার উপর কথা বলা যাবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলন বাম ঘেঁষা ছিল বলে ওই পুলিশি কার্যকলাপকে পিছন থেকে সমর্থন করেছিল কেন্দ্রের কংগ্রেসি সরকার।’

অভিজিৎ বিনায়ক বরাবরই রাজনীতি সচেতন ছিলেন। শৈশব থেকেই বৈষম্যের বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে অবলিলায় মিশেছেন মানুষের সাথে। ছেলের নোবেল জয়ের খবরের পর অভিজিতের মা গণমাধ্যমকে শৈশবের কথা বলতে গিয়ে জানিয়েছিলেন, ছোটবেলায় বস্তির ছেলেদের সঙ্গে রাস্তায় খেলত। পরিবার আটকায়নি। সেই সময় থেকেই গরিবি, অভাব নিয়ে কৌতূহল ছিল। যত পথ এগিয়েছে অভিজিৎ বিনায়ক এই দারিদ্রতা বৈষম্য নিরসনের সন্ধান পাওয়ার সন্ধানে এগিয়েছেন। তাই গ্রামীণ ছাত্রছাত্রীদের অতিরিক্ত ফি-র বোঝা তাকে আন্দোলনের সামিল করে দিয়েছিল। ৮৩-তে জেলে যাওয়া অর্থনীতির ছাত্র ৩৬ বছর পর নোবেল জিতলেন।