সারাদেশ ৭ আগস্ট, ২০১৯ ০৭:৪১

নড়াইলে প্রযুক্তির দাপটে বিলীন মৃৎশিল্প

নিজস্ব প্রতিনিধি।।

নড়াইলের মৃৎশিল্পীরা ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে নিপুন হাতে কাজের মাধ্যমে মাটি দিয়ে তৈরি থাকেন নানা তৈজসপত্র। তাদের জীবিকার হাতিয়ার হলো মাটি। কিন্তু কালের বিবর্তনে তাদের ভালোবাসার জীবিকা ফিকে হতে বসেছে।

দিন যতই যাচ্ছে, ততই বাড়ছে আধুনিকতা। আর আধুনিকতার সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির তৈরি শিল্পপণ্যগুলো। একসময় মাটির তৈরি তৈজসপত্রের প্রচুর ব্যাবহার ছিলো। সেই তৈজসপত্রের স্থান দখল করে নিয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈরি তৈজসপত্র। এ সবের দাম বেশি হলেও অধিক টেকসই। তাই টাকা বেশি হলেও অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈজসপত্রই কিনে থাকে সাধারন মানুষেরা। কাঁচ, প্লাস্টিক ও মেলামাইনের ভিড়ে এখন মাটির তৈরি ঐ জিনিষপত্রগুলো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না। সেই সাথে এই শিল্পের সাথে জড়িতদের জীবন ধারনও কঠিন হিয়ে পড়েছে।

মানবেতর জীবন যাপন করছে প্রতিভাবান নড়াইলের মৃৎ শিল্পীরা। ফলে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে। ঐতিহ্যবাহী নড়াইলের মৃৎশিল্প সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নড়াইলের কুমার পরিবার দিনরাত একাকার করে মাটি দিয়ে তৈরি করছে বিভিন্ন মৃৎ-পণ্য। এই সব মৃৎ শিল্পীরা মাটি দিয়ে তৈরি করছেন পুতুল, ফুলের টব, কুয়ার পাত, হাটি পাতিলসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। পরে সেগুলোকে তারা নড়াইল শহরের দোকান এবং বাসা বাড়িতে বিক্রয় করে থাকেন কিন্তু এখন মৃৎ শিল্পের ব্যবহার তেমন চোখে পরে না। আগে নড়াইলের মিষ্টি মাটির পাথে বিক্রয় হতো। এখন একমাত্র দৈ ছাড়া অন্য কোন মিষ্টান্ন বিক্রীর ক্ষেত্রে মাটির পাত্র ব্যাবহার করা হয় না। এখন সৌখিন জিনিষপত্র এবং কুয়ার পাতই একমাত্র ভরসা। কিন্তু সঠিক দাম না পাওয়ায় আর বর্তমান অবস্থায় কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছে এসকল কারিগররা। বর্তমানে নড়াইলের গ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন উৎসব, মেলায় তৈরি খেলনা পুতুল ছাড়া অন্য কোন মৃৎ শিল্পের গ্রাহক নেই বললেই চলে।

অ্যালুমিনিয়াম, প্লাস্টিক ও স্টিলের জিনিষপত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে নড়াইলের মৃৎশিল্প আজ বিলুপ্তির পথে। এ পেশায় জড়িত ব্যাক্তিদের জীবনযাপন কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

-উজ্জ্বল রায়, নড়াইল প্রতিনিধি।