ডেস্ক রিপোর্ট।।
তারেক জিয়াকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদ ছাড়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ৩জন সদস্য। তারা বলেছেন, আপনি বিএনপি ছাড়ুন না হলে আমরাই বিএনপি থেকে চলে যাবো। আজ বিএনপির কেন্দ্রীয় ৩ নেতার পদত্যাগের পর স্থায়ী কমিটির ৩ সদস্য এই আল্টিমেটাম দিলেন।
জানা গেছে যে, তারেক জিয়ার সঙ্গে স্কাইপে কথা বলেন বিএনপির প্রভাবশালী ৩ নেতা। তিনজনই মনে করছেন যে, তারেক জিয়ার কারণেই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হচ্ছে না এবং বিএনপি কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছে না। এই তিন নেতা তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে, তারেক জিয়া একের পর এক বিভ্রান্তি মূলক সিদ্ধান্ত এবং রাজনৈতিক বিবেচনাহীন কর্মকাণ্ডের কারণে বিএনপি আজ ধ্বংসের দ্বাড়প্রান্তে দাড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির যে ৩জন নেতা এই আল্টিমেটাম দিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং মির্জা আব্বাস। তারা ৩জনই মনে করছেন, বিএনপিতে এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দরকার নেই। বেগম খালেদা জিয়া চেয়ারম্যান হিসাবে কারাগার থেকে দায়িত্ব পালন করলেই বিএনপি আরো চাঙ্গা হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন ত্বরান্বিত হবে।
বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের শুরু থেকেই বিএনপির শীর্ষ মহলে একটা মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল। বিশেষ করে কোন দাবি না মেনেই তারেক জিয়ার নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত সরকারের সঙ্গে সংলাপে যাওয়ার পরামর্শ। ঐক্যফ্রন্ট গঠন এবং নির্বাচনের পরে সংসদে যোগদানের সিদ্ধান্ত বিএনপির মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছিল। এরফলে তারেক জিয়া বিএনপিতে একজন ভিলেনে পরিণত হয়েছেন। তৃণমূলেও তার জনপ্রিয়তা ক্রমহ্রাসমান। তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্তের কারণে বিএনপির সর্বস্তরেই হতাশা এবং বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বশেষ স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিএনপির নেতারা তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কিন্তু প্রকাশ্যে তারা কেউ তারা তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলতেন না। এখন তারেক জিয়ার কিছু কিছু সিদ্ধান্তের কারণে বিএনপির শীর্ষ নীতি নির্ধারক সংস্থা স্থায়ী কমিটিতেও ক্ষোভ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
একাধিক বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ধাপে ধাপে আন্দোলন করা হবে। কিন্তু তারেক জিয়া লন্ডন থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীরকে আন্দোলনের ব্যাপারে ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেই আন্দোলনের গতি থামিয়ে দিয়েছেন। বরং তারেক জিয়া সংকেত দিয়েছে দেশে কিছু একটা হচ্ছে এখন আন্দোলন করার দরকার নেই।
কিন্তু বিএনপির নেতারা মনে করছেন যে এই আন্দোলন না করে যদি ঘরে বসে থাকা হয় তাহলে খালেদা জিয়ার মুক্তি কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। এই পেক্ষিতেই তারেকের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব তৈরি হয়। তবে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলছিলেন না। আজকে সন্ধ্যায় এই বিষ্ফোরণ ঘটে। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেন তারেকের নেতৃত্বে বিএনপি করা সম্ভব নয় এবং তাকে আপাতত বিএনপির দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার জন্য আল্টিমেটাম দেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
এরপর গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও মির্জা আব্বাসও একই মনোভাব প্রকাশ করেন বলে বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
যদিও বিএনপির একটি সূত্র বলছে যে, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই তিন নেতার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন এবং বিএনপিকে আরো দূর্বল করার জন্য সরকারের একটি চক্রান্ত বলে বিএনপির কোনো কোনো নেতা মনে করছেন। কিন্তু বিএনপিতে তারেকের রাজত্বের অবসান চান এরকম একাধিক নেতা বলেছেন, তারেকের অত্যাচার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। তারেকের নেতৃত্বে বিএনপি করা অসম্ভব।


















