ডেস্ক রিপোর্ট।।
সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও অনিয়ম-সমালোচনা একই ফ্রেমে বন্দি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই একেরপর এক কাণ্ডের জন্য আলোচনা-সমালোচনায় থেকেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। মালিকানা ও ট্রাস্টি বোর্ড নিয়ে দ্বন্দ্ব, ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ছাত্র খুনসহ নানা অপকর্মের কারণে সংবাদের শিরোনাম হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসেবে শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য শিরোনাম হাওয়ার কথা থাকলেও হয়েছে ঠিক এর উল্টো। এবারও আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চলছে টালবাহানা।
সবশেষ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তি করেছে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। ২০১৪ সালের ২৩ এপ্রিলের একটি সভার সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তি করতে নিষেধ করেছে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলও। তবুও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর/অক্টোবরে আইন বিভাগের ২১ তম ব্যাচে প্রায় ১শ’ শিক্ষার্থী ভর্তি করে। এছাড়া ২২ ও ২৩ তমও ব্যাচেও প্রায় ১৫০ শতাধিক ছাত্র ভর্তি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে বার কাউন্সিলের পরীক্ষা আসন্ন হলেও ২১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এখন পরীক্ষার সুযোগ পান নি। বার কাউন্সিল থেকে বলা হচ্ছে ইউনিভার্সিটি কেন নোটিশ অমান্য করে ছাত্র ভর্তি করলো। আর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, আমাদের ভুল হয়েছে এভাবে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা। শুধু সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিই নয় আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এরকম বেশি ছাত্র ভর্তি করেছে।
অন্যদিকে ২১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁরা দাবি করছেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলছে। কারণ তারা ইউজিসি নোটিশ এবং বার কাউন্সিলের নোটিশ লুকিয়ে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তি করছে। এই দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না।
২১ তম ব্যাচের একাধিক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল, নোটিশ লুকিয়ে না রেখে সেই অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা। কারণ এখানে শুধু আমরা নয়, আমাদেরও পরিবারও জড়িত। এখন যদি আমরা পরীক্ষা না পাই তাহলে ভার্সিটির বিরুদ্ধে আমরা প্রতারণার মামলা করতে বাধ্য হব।
এসব বিষয় সম্পর্কে জানতে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা তারেক উদ্দিন তাজের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয় সিলেট ভয়েস কর্তৃপক্ষ। টানা তিনদিন তাকে ফোনে এমনকি ইউনিভার্সিটিতে গিয়েও তাঁর দেখা মেলেনি।
তবে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের প্রধান হুমায়ুন কবীর বলেন, বিষয়টা সম্পূর্ণ ইউনিভার্সিটির কর্তৃপক্ষের। আমি বিভাগীয় প্রধান হিসেবে এখানে কিছু করার নেই। তবে আমরা রিট করেছি আশা করি সকল শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারবে।
আর সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শহিদ উল্লাহ তালুকদার বলেন, বার কাউন্সিল নিয়ে শুধু আমাদের সমস্যা না। এটা দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা। আর যেহেতু বিষয়টা এখন এসেছে সেজন্য এটাকে এতো দ্রুত সমস্যা বলা যাবে না। এটাকে সমাধান কিভাবে করা যায় সেটাই আপনারা সরকারকে বলবেন।
তিনি আরো বলেন, এখন যেটা হচ্ছে বার কাউন্সিলে ছাত্ররা ভর্তি করার জন্য কিংবা বার কাউন্সিলের সদস্য হওয়ার জন্য পরীক্ষা দিবে। কিন্তু বার কাউন্সিল বলছে আপনারা তো ৫০ জনের বেশি ভর্তি করতে পারবেন না, তাহলে কেন আপনারা ছাত্র ভর্তি করেন। দেখেন আমরা তো শুধু বেশি ছাত্র ভর্তি করিনি সুতরাং একাধিক ভার্সিটি এ কাজটি করেছে।
নোটিশ কেন মানা হল না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ইউজিসি ও বার কাউন্সিলের সকল নোটিশ পালন করে থাকি। কিন্তু এটা মানা হয়নি, এটা আমাদের ভুল। এমন ভুল আর হবে না। আর আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি বেশিদিন হয়নি। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আমি প্রচুর হোঁচট খেয়েছি, এটা আপনারা জানেন। আমরা চেষ্টা করি সকল আইন ও নিয়মনীতি মেনে ভার্সিটি পরিচালনা করতে। আশাকরি আগামীতে ভার্সিটি সুন্দরভাবে চলবে।





















