সারাদেশ ৪ অক্টোবর, ২০১৯ ১১:০২

অবৈধ অটো রিকসা থেকে পুলিশের কোটি টাকা আয়ের অভিযোগ

ডেস্ক রিপোর্ট ।।

অবৈধ অটো রিকসা থেকে মিরপুর বিভাগীয় পুলিশের কোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য একাধিকবার বলেও এই অটো রিকসা বন্ধ করতে পারেনি। এই প্রেক্ষিতে আজ মহানগর উত্তর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পি অটো রিকসা বিরোধী এক সচেতনতা মূলক পথ সভার আয়োজন করে।

এই সময় কয়েকটি অটো রিকসা চলতে দেখলে সেগুলো আটকে তিনি পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলামকে ফোন দেন। এই সময় ওসি দাবী করেন, এই অবৈধ অটো রিকসা ধরতে কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে! পরবর্তীতে ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের ডিসিকে জানালে তিনি পল্লবী থানার ওসিকে বলতে বলেন। তাকে যখন জানান হয় ওসি বলেছে এটা ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্ব, তখন তিনি পল্লবীর ওসিকে ফোন করে কিছুক্ষণ পর বাপ্পিকে কল করে একটি নাম্বার দেন। সেই নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে একজন সার্জেন্ট এসে তাৎক্ষনিকভাবে আটক ৫টি অটো রিকসার দায়িত্ব নেন।

ওসি আমাদের কাগজকে আরো জানান, এটি পুরোপুরি ট্রাফিক পুলিশের কাজ, এখানে থানা পুলিশের কোনো কাজ নেই। যদি থানা পুলিশের কোনো কারনে সাহায্য চাওয়া হয় তবে সেই ক্ষেত্রে আমরা সাহায্য করতে পারি।

অবৈধ অটো রিকসা নিয়ে পুলিশের ক্রাইম ও ট্রাফিক বিভাগের ঠেলা-ঠেলি দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। এই অটোরিকসাকে নিয়ন্ত্রণ করে তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। তবে পুলিশের বিরুদ্ধেই মূল অভিযোগ। অভিযোগ রয়েছে শুধু পুলিশের মিরপুর বিভাগের এই অটোরিকসা থেকে আয় মাসে দুই কোটি টাকা। এই টাকার ভাগ যায় প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে। তাই এই অটোরিকসা বন্ধ করা কার পক্ষে সম্ভব হয় না। মাসে প্রতি অটো রিকসাকে রাস্তায় চলতে দিতে হয় ১৫০০ টাকা করে। রাজধানীর মিরপুর জুড়ে রয়েছে কমপক্ষে ১০ হাজার অটোরিকসা। ১০ হাজার অটোরিকসা থেকে উঠে দেড় কোটি টাকা। এছাড়া্ও অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে দেওয়া চার্জের কারণে মাসে দিতে হয় ৫০০ টাকা করে। এর থেকে আয় আরো ৫০ লাখ টাকা।

অটোরিকসা চালকরা মাসে ১৫০০ টাকা করে দেওয়ার কারণে নিজেদের রাস্তার রাজা ভাবে। বেপরোয়া গতিতে রিকসা চালায়। যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। এমন কি পথচারীদের সঙ্গে নিয়মিত সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পুলিশ পক্ষে থাকার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু করার ক্ষমতা রাখে না বলে তারা মনে করে।

পুলিশ মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করে কিছু অটোরিকসা আটক করলেও পরের দিনই সেই অটোরিকসাগুলো আবারও রাস্তায় নেমে পড়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ পুলিশ টাকা খেয়ে রিকসাগুলো ছেড়ে দেয়।

পল্লবী থানা যুবলীগের সভাপতি ও মহানগর (উত্তর) যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পি বলেন, আমি গতকালই পল্লবী থানায় আমার কর্মসূচীর বিষয়ে জানিয়েছি। কিন্তু, কর্মসূচী পালন করার সময় কোন পুলিশ উপস্থিত ছিলেন না। অবৈধ অটো রিকসার বেপরোয়া চলাচলের কারণে প্রতিদিনই সড়ক দূর্ঘটনা বাড়ছে। গতকাল দুয়ারীপাড়াতে একজন গুরুতর আহত হয়েছে। এছাড়াও আটো রিকসা চালকরা পথচারী ও যাত্রীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। গতকাল রাতে এক সাইকেল আরোহীকে পূরবী স্ট্যান্ডে এক অটো রিকসা চালক মেরে গুরুতর আহত করেছে। এর প্রেক্ষিতে পূরবী কালসী স্ট্যান্ড থেকে অটো রিকসার বিরুদ্ধে এই জনসচেতনামূলক কর্মসূচি শুরু করেছি। প্রশাসন সাহায্য করলে এই অভিযান নিয়মিত করব।

বাপ্পি আরও বলেন, অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারের কারণে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। আমি এই অটো রিকসার বিরুদ্ধে পল্লবী ও রূপনগর থানায় ইতিপূর্বে জিডি করেছি।

তিনি বলেন, এটি মূলত: পুলিশের কাজ। আমরা শুধুমাত্র পুলিশকে সহযোাগিতা করতে পারি, এর বেশি কিছু নয়। গতকালই আমি এই কর্মসূচির কথা পল্লবী থানার ওসি এবং অপারেশানকে অবহিত করেছিলাম। আশা করব পুলিশ এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।