ডেস্ক রিপোর্ট।।
কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধবিহারে হামলার ঘটনার সাত বছর অতিবাহিত হলেও সাক্ষীর অভাবে শেষ হচ্ছে না মামলার বিচার কার্যক্রম। ১৫ হাজার ১৮২ জনকে আসামি করে দায়ের করা ১৯টি মামলার প্রায় সব আসামি জামিনে রয়েছেন। জামিন নিয়ে দাপটের সঙ্গে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে আসামিরা। আর এই দীর্ঘসময় হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি না করার কারণে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতা ও সাধারণ মানুষের মধ্যে কাজ করছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের মাধ্যমে ‘কোরআন অবমাননার’গুজবের জেরে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ পল্লীতে চালানো হয় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ। এতে কক্সবাজার সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফে ১৩টি বৌদ্ধ বিহার এবং ৩০টি বসত বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঘটনার পরপরই ক্ষতিগ্রস্ত বিহার ও ঘরবাড়ি পুণনির্মাণ করে দেয় সরকার। হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৯টি আলাদা মামলা হয়। এর মধ্যে আপসে একটি মামলার নিষ্পত্তি হলেও সাক্ষীর অভাবে বাকি ১৮টি মামলার একটিরও বিচার সম্পন্ন হয়নি।
রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের আবাসিক ভিক্ষু প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বলেন, যারাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়াটাই সবার প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু আমরা এমন কোন কার্যক্রমই দেখছি না।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা যদি সাক্ষ্য দেন, তাহলে বিচারকাজ দ্রুত শেষ করা সম্ভব বলে মনে করেন রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম। তিনি বলেন, বিচার প্রক্রিয়ার কাজ চলছে। সাক্ষীদের যদি সঠিকমত উপস্থাপন করা হয়, তাহলে এই মামলার কাজ খুব দ্রুতই শেষ করা সম্ভব হবে।
রোহিঙ্গাদের কারণে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হলেই বিহারসহ সব বৌদ্ধপল্লিতে নিরাপত্তা জোরদার করার কথা জানান কক্সবাজার পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন। তিনি জানান, এই এলাকায় যখন রোহিঙ্গারা আসছে তখন থেকেই এই এলাকার মন্দিরগুলোয় নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে। গুরুত্বপুর্ণ মন্দিরগুলোয় আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে।
রামু সহিংসতার ঘটনায় বিনষ্ট হয়েছিল শত শত বছরের পুরানো নিদর্শন। হামলার ক্ষত শুকিয়ে রামুতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ফিরে আসলেও বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে।





















