আমাদের কাগজ ডেস্কঃ আলোচিত জেসমিনকে আটকের পর জেসমিনকে নির্যাতন করা হয়েছিল। এর ফলে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে, র্যাবের পক্ষ থেকে বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, জেসমিনের মাথায় আঘাতের পাশাপাশি হাতেও জখমের চিহ্ন দেখা গেছে। মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
এ ছাড়া ডান হাতে আঘাতের ওই স্থানে মাংসে রক্ত জমাট বেঁধে ছিল বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্ত দলের প্রধান।
জেসমিনের মৃত্যুর পর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার জেসমিন আক্তার। তিনি জানান, মাথা ছাড়াও জেসমিনের ডান হাতের কনুইয়ের কাছে তিনি আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন। সুরতহাল প্রতিবেদনে এসব আঘাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
রামেক মর্গে তিনজন চিকিৎসকের একটি বোর্ড ময়নাতদন্ত করে। এই দলের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন বলেন, ডান হাতে বাহুর নিচে ও কনুইয়ের কাছে একটা জখমের কালশিটে দাগ ছিল। ময়নাতদন্তের সময় ওই স্থানে মাংসে জমাটবাঁধা রক্ত দেখেছি।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম শামীম আহম্মদ জানিয়েছেন, জেসমিনের মাথার ডান পাশে তারা একটি আঘাতের চিহ্ন দেখেছিলেন। সিটি স্ক্যানে দেখা গেছে, তার মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এর বাইরে তারা অন্য কোথাও আঘাত দেখেননি।
মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ কী কারণে হতে পারে? জানতে চাইলে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ও রামেক-এর ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. কফিল উদ্দিন বলেন, ‘বাইরে থেকে আঘাত পেয়েও হতে পারে, আবার অসুস্থতার জন্যও হতে পারে। এই রক্তক্ষরণ কেন তা জানতে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করছি। হাতের আঘাতটা কীভাবে হয়েছিল সেটাও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।’
‘মৃত্যু সনদে মস্তিস্কে ‘রক্তক্ষরণ এবং হার্টফেইল’কে মৃত্যুর কারণ বলে উল্লেখ করেছেন চিকিৎসক। এ জন্য জেসমিনের হার্টও সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। সবগুলো রিপোর্ট পেলে আমরা তিনজন চিকিৎসক বসে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাব। তখন মতামতসহ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। এই প্রক্রিয়ায় আরও চার-পাঁচ দিন সময় লাগতে পারে।’ বলেন ডা. কফিল উদ্দিন।
জেসমিনকে আটক করা হয় স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে। আটকের পরদিন ২৩ মার্চ তিনি নগরীর রাজপাড়া থানায় একটি মামলা করেন। এতে তিনি আল-আমিন নামে এক ব্যক্তি এবং জেসমিনের বিরুদ্ধে তার নামে ফেসবুক আইডি খুলে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ আনেন।
জেসমিনকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে র্যাব-৫ এর রাজশাহীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার বলেন, ‘জেসমিনকে নির্যাতন করার কোনো কারণ নেই। তিনি যে প্রতারক চক্রের সঙ্গে জড়িত, তা প্রমাণ হয়েছে আগেই। তিনি তা স্বীকারও করেছিলেন।’
আমাদের কাগজ/এমটি





















