সারাদেশ ২৫ অক্টোবর, ২০২২ ১১:১৯

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ৮ জেলায় প্রাণ গেলো ১১ জনের

ছবি:ইন্টারনেট

ছবি:ইন্টারনেট

অনলাইন ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের মধ্যে গাছ ভেঙে পড়ে এবং দেয়াল ধসে দেশের পাঁচ জেলায় অন্তত ১১ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন উপকূলীয় জেলায় গাছ ভেঙে সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর আসতে থাকে, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে ও তার ছিঁড়ে বহু এলাকা অন্ধকারে ডুবে যায়। সোমবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

কুমিল্লা
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে গাছ উপড়ে পড়ে স্বামী-স্ত্রী ও তাদের এক সন্তান মারা গেছেন। সোমবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার হেশাখাল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ওই এলাকার মো. নিজাম উদ্দিন, তার স্ত্রী সাথি আক্তার ও মেয়ে লিজা আক্তার। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

নড়াইল
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ঝড়ে নড়াইলে গাছের ডাল পড়ে মর্জিনা বেগম (৩২) নামে এক গৃহপরিচারিকার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ চত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, মর্জিনা বেগম বাগেরহাটের স্থায়ী বাসিন্দা। স্বামী ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ছেলে জিহাদকে (১১) নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে লোহাগড়া পৌর এলাকার রাজুপুর গ্রামের আব্দুল গফ্ফারের বাড়িতে ভাড়া থেকে বিভিন্ন বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন তিনি। লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ চত্বর এলাকায় পৌঁছালে মেহগনি গাছের ডাল ভেঙে মাথায় পড়ে গুরুতর আহত হয় মর্জিনা। স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসিরউদ্দিন বিষয়টির নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মৃতের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। স্বজনরা এলে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

বরগুনা
বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সৃষ্ট ঝোড়ো বাতাসে বসতঘরে গাছ উপড়ে পড়ে আমেনা খাতুন নামে ১১৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাত ৮টার দিকে বরগুনা সদর উপজেলার সোনাখালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে জেলা প্রশাসন। মৃতের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা করা হবে।

ভোলা
ভোলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সদর, দৌলতখান, লালমোহন ও চরফ্যাশন উপজেলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত পাঁচজন। এর মধ্যে সোমবার রাতে তিনজন ও মঙ্গলবার ভোরের দিকে একজন নিহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন- ভোলা সদরের ধনিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চেওয়াখালী গ্রামের মো. মফিজুল ইসলাম (৬০), দৌলতখান পৌর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের খাতিজা বেগম (৬০), চরফ্যাশন উপজেলার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের মো. মনির হোসেন (৩০) ও লালমোহন উপজেলার লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের রাবেয়া বেগম (২৫)। ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম ভোলা সদর ও দৌলতখানের হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চরফ্যাশন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল নোমান তার উপজেলায় নিহতের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এখন পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক ঘর পুরো বিধ্বস্ত ও এক হাজারের অধিক ঘর আংশিক বিধস্ত হয়েছে। অন্যদিকে, লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুবুর রহমান তার থানায় একজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ঝড়ে নৌকাডুবিতে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার সয়দা ইউনিয়নের পূর্ব মোহনপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- পূর্ব মোহনপুর গ্রামের খোকন সেখের স্ত্রী আয়েশা খাতুন (২৮) ও তার ছেলে আরাফাত হোসেন (২)।

মঙ্গলবার সকালে সয়দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।