রাজনীতি ৩০ জুলাই, ২০১৯ ০৬:২০

ডেঙ্গু নিয়ে হাসি ঠাট্টা নয়

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে হাসি-ঠাট্টা বা কোনো অবহেলা না করে এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

গতকাল সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে কোনো হাসি-ঠাট্টা করা যাবে না। একই সঙ্গে ভয় না পেয়ে চিকিৎসা নিন। জ্বর হলে সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা করানো উচিত। একই সঙ্গে শুধু পানিজাতীয় খাবার খেতে হবে। এটা আমি জানি, আপনারাও জানেন, ডেঙ্গু দমনে যে ওষুধ ছিটানো হয় তা দিয়ে মশা মরে না। আর এটা শুধু আমাদের একার সমস্যা নয়। এ ডেঙ্গু এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সমস্যা। এটা হয়েছে আবহাওয়াগত পরিবর্তনের কারণে।

তিনি বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য এডিস মশা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ ধরনের জলবায়ু থাকবে। এ মশা বেশি ঠা া ও বেশি গরমে মারা যায়। ২৫ থেকে ২৯ ডিগ্রি তাপমাত্রায় এডিস মশা বেশি হয়। একই সঙ্গে প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে এ এলাকায় এডিস মশার প্রাদুর্ভাব বেশি। মশা মারার ওষুধে কাজ হয় না- এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেশে না হয় ওষুধে কাজ করে না কিন্তু ভারত, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরের মতো দেশেও ডেঙ্গু হয়। সেখানে তো ওষুধ দেওয়া হয়। তাহলে তাদের ওষুধ কেন কাজ করে না। আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্যই এটা হচ্ছে। সব দেশেই একই অবস্থা। ফলে আমাদের সচেতন না হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) বাজেটের রেমিট্যান্সের ওপর দুই শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু কিছু জটিলতার কারণে সেটা কার্যকর করতে সমস্যা হচ্ছে। এ জন্য একটি নীতিমালা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এ প্রণোদনা এরই মধ্যে কার্যকর রয়েছে। আজকে যদি কেউ রেমিট্যান্স হিসেবে ১০০ টাকা পাঠান, তিনি ১০২ টাকা পাবেন। আবার কেউ যদি ছয় মাস পরে পাঠান তিনিও সেটাই পাবেন। এটা আর কোনো ধরনের সন্দেহ-সংশয়ের অবকাশ নেই। এটা গত ১ জুলাই থেকেই কার্যকর দেখানো হচ্ছে। এ বিষয়ে এনবিআর খুব শিগগিরই একটি এসআরও (প্রজ্ঞাপন) করবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ৩০ জুন সংসদে বাজেট পাস হয়েছে। ১ জুলাই থেকেই রেমিট্যান্সে প্রণোদনার সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। তবে এগুলোকে ফাংসনাল করার জন্য কিছু সময় লাগে। লিগ্যাল ওয়েতে রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য এ অর্থবছর থেকেই ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেব। এটা আমরা বাজেটে পাস করেছি। কিন্তু সিস্টেম এখনো ডেভেলপ করতে পারিনি। প্রণোদনা দেওয়ার জন্য সিস্টেম আপডেট করতে আরও দুই থেকে তিন মাস সময় লাগবে। তিনি বলেন, সামনে ঈদ অনেকেই ধারণা করছে এখন দেশে কেউ রেমিট্যান্স পাঠালে তারা প্রণোদনা পাবে না। এটা কিন্তু ঠিক নয়। এটা যেহেতু বাজেটে পাস হয়েছে সেহেতু এখন রেমিটেন্স পাঠালেও দুই শতাংশ প্রণোদনা ছয় মাস পরে হলেও পাবে। এখন পাঠালেও পাবে, পরে পাঠালেও পাবে। অর্থাৎ জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকেই যারা রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন তারাই ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাবেন। এক্ষেত্রে সিস্টেমটা ডেভেলপমেন্ট করতে আমরা দ্রুত কাজ করে যাচ্ছি। এটা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। এক্ষেত্রে কোনো ট্যাক্স কাটা হবে  না। কেউ ১০০ টাকা রিমিট্যান্স পাঠালে ১০২ টাকা পাবে। এমনকি কোনো ধরনের ট্যাক্স বা সার্ভিস চার্জ কাটা হবে না।

পারিবারিক সঞ্চয়পত্রে উৎসে কর ৫ শতাংশ কমানো হবে : অর্থমন্ত্রী বলেন, সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসে কর ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশের প্রস্তাব বহাল রেখে বাজেট পাস করা হয়েছিল। এখন সেটা থেকে ৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সঞ্চয়পত্রে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে উৎসে কর ৫ শতাংশই কাটা হবে। প্রথমে পেনশনভোগীদের জন্যই সঞ্চয়পত্রের বিষয়টি আসে। এরপর এটির বিস্তৃতি ঘটে। তবে বিস্তৃতির পর এক্ষেত্রে অপব্যবহার বেড়ে গেছে। এর ফলে সঞ্চয়পত্রের সুবিধা গরিব ও পেনশনভোগীদের পরিবর্তে পাচ্ছেন ধনীরা। তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রে পেনশনারদের ক্ষেত্রে বাজেটের আগেও যে সুবিধা ছিল এখনো সেটা বলবৎ থাকবে। আর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য সব ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে মুনাফার ওপর উৎসে কর ৫ শতাংশ। এ জন্য খুব শিগগির এনবিআর একটি এসআরও জারি করবে। এটির কার্যকারিতা ১ জুলাই থেকেই ধরা হবে। ৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে উৎসে হবে ১০ শতাংশ।

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন