নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনৈতিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ২২ অক্টোবর খুলনায় সমাবেশ করবে বিএনপির। নগরের সোনালী ব্যাংক চত্বরে এ গণসমাবেশটি হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এ সমাবেশকে বন্ধ করতে আগামী ২১ ও ২২ অক্টোবর মালিক সমিতির সব রুটের গাড়ি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ময়মনসিংহে একদিন আগে যানবাহন বন্ধ রাখলেও খুলনায় সমাবেশের দুই দিন আগেই বাস চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিলো।
তবে গাড়ি বন্ধ রাখার জন্য ‘খুলনা জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস মালিক সমিতি’ অবৈধভাবে যানবাহনকে দায়ী করছে। তারাঁ বলছে সড়ক ও মহাসড়কে অবৈধভাবে চলাচল করা যানবাহন আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে প্রশাসন বন্ধ না করলে পরবর্তী দুই দিন সব রুটের গাড়ি বন্ধ থাকবে। খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির একাধিক নেতা জানিয়েছে, ২২ অক্টোবরের সমাবেশে জনসমাগম ঠেকানোর উদ্দেশ্যেই ২১ ও ২২ অক্টোবর খুলনার সব রুটের গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
খুলনা জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. মিজানুর রহমান। জানিয়েছেন, তিনি ঢাকায় আছেন, মিটিংয়ে ছিলেন না। তবে তাঁর সঙ্গে কথা বলেই সড়ক ও মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ করার দাবিতে ওই দুই দিন খুলনা থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই।
তিনি আরও বলেন,কোনো সংগঠন যদি চায় তাহলে বাস চালাবে। তবে কোনো অঘটন ঘটলে এর দায়ভার কেউ নেবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাস মালিক সমিতির একাধিক নেতা জানান,কার্যত ‘রাজনৈতিক চাপে’ তাঁরা বাস চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছেন।মালিকদের সিদ্ধান্ত সমর্থন করে দুই দিন বাস না চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন খুলনার শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
খুলনা থেকে ১৮টি রুটে দুই শতাধিক বাস চলাচল করে। অন্যদিকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সমাবেশ বানচাল করতে ক্ষমতাসীনদের হস্তক্ষেপে বাস মালিক ও শ্রমিকেরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
খুলনা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২২ অক্টোবরের সমাবেশ উপলক্ষে ১৮টি উপকমিটি করে ব্যাপক জনসমাগমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও উপজেলায় কর্মিসভা, প্রস্তুতি সভা হয়েছে। ১৫ অক্টোবর থেকে জেলা ও উপজেলায় কয়েক লাখ প্রচারপত্র বিলি করা হয়েছে।
সমাবেশে খুলনা বিভাগের ১০ জেলা থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ও সমর্থক অংশ নেবেন বলে আশা করছেন দলের নেতারা। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সমাবেশ সমন্বয় করছেন। কিন্তু হঠাৎ সমাবেশের এক দিন আগে থেকেই খুলনায় পরিবহন চলাচল বন্ধের ঘোষণা নেতা-কর্মীদের বিপাকে ফেলেছে।
এর মধ্যে সমাবেশ সামনে রেখে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান। তিনি গতকাল নগরের কেডি ঘোষ রোডের কার্যালয়ে সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে দলের নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে সারা দেশে বিভাগীয় পর্যায়ে গণসমাবেশ শুরু করেছে বিএনপি। ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশের পর ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে সমাবেশ হয়েছে। ২২ অক্টোবর খুলনার পর ২৯ অক্টোবর রংপুরে সমাবেশ হওয়ার কথা।
এরপর ৫ নভেম্বর বরিশালে, ১২ নভেম্বর ফরিদপুরে, ১৯ নভেম্বর সিলেটে, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায়, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ হবে। তবে সরকারি দলের বাধাবিপত্তি এড়িয়ে এসব সমাবেশ শেষ পর্যন্ত কতটা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করা যাবে, তা নিয়ে বিএনপির নীতিনির্ধারকদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে।
আমাদের কাগজ//টিএ




















