জাতীয় ২৬ অক্টোবর, ২০১৯ ০৯:০২

বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি: ধরাছোঁয়ার বাইরে আব্দুল হাই বাচ্চু

ডেস্ক রিপোর্ট।। 

চার বছর ধরে দুদকের অনুসন্ধানের খাতায় ঝুলছে বেসিক ব্যাংকের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা। সবচেয়ে বেশি অভিযোগের তীর যে আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে, তিনি এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ ঘটনায় ৫৬টি মামলা হলেও আসামি করা হয়নি তাকে। যার সমালোচনা করেছেন খোদ অ্যাটর্নি জেনারেলও। দুদকের আইনজীবীর দাবি, ঋণের টাকা কোথায় গেছে তা খুঁজে বের করতে দেরি হচ্ছে।

বেসিক ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা এখনও গুরুত্ব পায় নানা মহলের আলোচনায়। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের ইতিহাসে অন্যতম বড় এ কেলেঙ্কারীর মামলা ৪ বছর ধরে ঝুলে দুদকের অনুসন্ধানের খাতায়। যদিও এ নিয়ে দিনের পর দিন একই বক্তব্য সংস্থাটির।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ জানান, বেসিক ব্যাংকে টাকা লোপাটের ঘটনায় অনেককেই ধরা হয়েছে এবং অনেক টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় মামলা হয়েছে ৫৬টি। তবে যার বিরুদ্ধে অভিযোগে তীর সবেচেয়ে বেশি ব্যাংকের সেই চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু এখনও ধরাছোয়ার বাইরে। ২০১৭ সালে হাইকোর্টের এক রায়ে বলা হয়, শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর একচ্ছত্র দাপট আর খামখেয়ালিপনায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে ব্যাংকটাকে। কিন্তু তারপরও আসামি করা হয়নি তাকে।

সম্প্রতি ঢাকা ১০ আসনের সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নুর তাপসও প্রশ্ন তোলেন বাচ্চুকে গ্রেপ্তার না করা নিয়ে। পরদিন এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় দুদক সচিবের দাবি, বাচ্চুর বিরুদ্ধে পাননি সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ।

শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর বিষয়ে আইনজীবী শেখ ফজলে নুর তাপস বলেন, শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় দুদকের এ প্রেক্ষিতে জবাবদিহিতা আবশ্যকীয়।

এ বিষয়ে দুদকের সচিব বলেন, উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা সম্ভব না।

এতদিনেও চার্জশিট না দিতে পারার কারণ ব্যাখা দিতে গিয়ে দুদক আইনজীবী বলেন, ঋণের টাকা কোথায় গেছে, তা খুঁজতে দেরি হচ্ছে। যদিও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও দন্ডবিধি অনুযায়ী এখন পর্যন্ত এমন মামলায় অর্থ কোথায় কোথায় গেছে তা খোঁজা হয়নি। তাই অর্থ কোথায় গেছে, তা খুঁজতে দুদক সময় ক্ষেপন করছে কি না--এমন প্রশ্নে আইনজীবীর জবাব মোটেও না।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, সব কিছু সঠিক ভাবে যাচাই বাছাই করে পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

এ মামলায় আব্দুল হাই বাচ্চুকে হাইকোর্ট আসামি করতে বললেও তা পাত্তাই দেয়নি দুদক। যার সমালোচনা করেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তাও।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, একটা ব্যাংক নানারকম ক্ষতির শিকার হলে সকলেই এর দায় নিতে বাধ্য। সকলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ বলে মনে করেন অ্যাটর্নি জেনারেল  

এ মামলায় এখন পর্যন্ত হাইকোর্টের কোন রায় স্থগিত চায়নি দুদক। করেনি আপিলও। তাই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, কবে নাগাদ শেষ হবে তদন্ত। কবেইবা আসামি করা হবে আব্দুল হাই বাচ্চুকে।