জাতীয় ৭ এপ্রিল, ২০২৩ ০৪:৩৫

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের গণতন্ত্র নিরাপদ ও সুরক্ষিত : রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৪ বছরে বলিষ্ঠ ও সুদৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার সকল যোগ্যতা অর্জন করেছে। তারই নেতৃত্বে দেশের গণতন্ত্র আজ নিরাপদ ও সুরক্ষিত। বর্তমানে জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধি ব্যতীত অন্য কোনো গোষ্ঠী বা অসাংবিধানিক শক্তির রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণের সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

শুক্রবার, ৭ এপ্রিল জাতীয় সংসদের ৫০ বছর উপলক্ষ্যে সংসদে দেওয়া এক বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় সংসদে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদসহ অধিকাংশ সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ও দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে ৭ এপ্রিল একটি ঐতিহাসিক ও অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭৩ সালের এই দিনে জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল। সদ্য স্বাধীন দেশে যাত্রা শুরু হয়েছিল সংসদীয় গণতন্ত্রের। তবে এই যাত্রার পেছনে রয়েছে ২৪ বছরের অত্যাচার, শোষণ ও নির্যাতনের করুণ ইতিহাস। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত হয়ে পাকিস্তান সৃষ্টি হলেও বাঙালি জাতি আবারও পাকিস্তানের একটি প্রদেশ পূর্ব পাকিস্তানে নতুন করে পাকিস্তানিদের পরাধীনতার কবলে পড়ে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪-তে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮-তে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬-এর ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে পাকিস্তানি শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধিকার আন্দোলন। ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে, ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি গণতন্ত্রের উন্নয়নকেও সমান গুরুত্ব দিতেন। তাই ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলেছেন। ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও তৎকালীন শাসক চক্রের চক্রান্তের জন্য সংসদে বসার সুযোগ হয়নি।  

তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের গণপরিষদ এবং ১৯৭৩ সালের বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্যদের বেশিরভাগই আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। বর্তমান সংসদে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে তোফায়েল আহমেদ, আমি এবং প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হিসেবে আমির হোসেন আমু, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক ও রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু জীবিত আছেন।

সারাদেশে ১৫ থেকে ২০ জন বেঁচে থাকতে পারেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে রাজনীতি করেছেন বা কাছে থেকে দেখেছেন তাদের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। একইভাবে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী ও অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যাও দিন দিন কমছে।  তাই জাতীয় সংসদের ইতিহাস নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য এই বিশেষ অধিবেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। আমি আশা করি, সংসদ সদস্যরা তাদের বক্তব্যে সংসদের ইতিহাসের পাশাপাশি সংসদ পরিচালনায় বঙ্গবন্ধুর রীতিনীতি, কর্মকৌশল এবং স্বাধীনতার সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকেও দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরবেন।

আমাদেরকাগজ/ এইচকে