আমাদের কাগজ ডেস্কঃ কেউ বাসে কেউবা ট্রেনে, কন কনে শীত উপক্ষো করে লাখ লাখ মুসল্লিতে পরিপূর্ণ টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমার ময়দান। রোজ শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এবারের বিশ্ব ইজতেমা-২০২৩ এর প্রথম পর্ব। বিশ্ব ইজতেমার প্রথমদিনে জুমার নামাজে দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লির জমায়েত। আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে তুরাগ নদীর তীর। শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় দোয়া করেন সবাই।
জানা যায়, ইজতেমা উপলক্ষে ১৬৫ একর জমিতে শামিয়ানা টানিয়ে মুসল্লিদের অবস্থানের জায়গা করা হয়েছে। তাঁদের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। ময়দানের উত্তর-পশ্চিম পাশে বিদেশি মুসল্লিদের কামরার পাশে করা হয়েছে মূল মঞ্চ। সেখানে বৃহস্পতিবার বাদ জোহর মাওলানা রবিউল হক ইমান ও আমলের বয়ান করেন। করোনা মহামারি ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে দুই বছর হয়নি ইজতেমা। এবার মুসল্লিদের জমায়েতে আগের সব রেকর্ড ভেঙে যাবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।
মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কাল পেরিয়ে আবারো সমবেত হতে পারায় শুকরিয়া আদায় করেন তারা। পুরো আয়োজন ঘিরে নেয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। নামাজ শুরু হয় দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে; ইমামতি করেন বাংলাদেশের মাওলানা জোবায়ের।
ইজতেমায় যোগদানকারী মুসল্লি ছাড়াও জুমার নামাজে অংশ নিতে রাজধানী ঢাকা ও গাজীপুর, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জসহ আশপাশের এলাকার লাখ লাখ মুসল্লি ইজতেমাস্থলে হাজির হন। ভোর থেকেই রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে ইজতেমা মাঠের দিকে মুসল্লিদের ঢল নামে। দুপুর ১২টার দিকে ইজতেমা মাঠ উপচে আশপাশের খোলা জায়গাসহ সব স্থান পরিণত হয় জনসমুদ্রে। বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠের দিকে ছুটে আসেন জুমার নামাজ আদায় করার জন্য। মাঠে স্থান না পেয়ে মুসল্লিরা মহাসড়ক ও অলিগলিসহ যে যেখানে পেরেছেন চটের বস্তা কিংবা খবরের কাগজ বিছিয়ে নামাজে শরিক হন। এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম আমাদের কাগজকে জানান, ইজতেমার নিরাপত্তায় বিভিন্ন সংস্থার ১২ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, প্রথম পর্বে আগত মুসল্লিদের জন্য পুরো ময়দানকে ৯২ খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। প্রত্যেক খিত্তায় একজন করে জিম্মাদার আছেন। আগতরা খিত্তার জিম্মাদার থেকে সব ধরনের পরামর্শ নেবেন।
ইজতেমা ময়দানে দায়িত্বে থাকা মুফতি জহির মুসলিম জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রায় ৪০ হাজার মুসল্লি ময়দানে এসেছেন। শুক্রবার ইজতেমা ময়দানে বৃহত্তম জুমার নামাজের জামাত হবে। জুমার নামাজে ইমামতি করবেন মাওলানা জোবায়ের।
আমাদের কাগজ/ এম টি