বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০৩:৪৪

দেশে তৈরি হচ্ছে বৈদ্যুতিক গাড়ির কারখানা, বিনিয়োগে ১৪৪০ কোটি

আমাদের কাগজ ডেস্ক : দেশে শুরু হতে যাচ্ছে ইলেকট্রিক বা বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইলেকট্রিক ভেহিকেল) তৈরির কারখানা। প্রযুক্তির আদলে এরই মধ্যে দেশ বৈদ্যুতিক গাড়ির যুগে প্রবেশ করেছে। 

এ খাতের কারখানা তৈরি উদ্যোগ নেওয়ায় সম্মতি জানিয়ে কারখানা তৈরিতে ১ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এ কারখানা করতে ৭৯০ কোটি টাকা জোগান দিচ্ছে ১০টি ব্যাংক মিলে। বাকি টাকা উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করবেন। 

জানা যায়, দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক গাড়ি কারখানাটিতে ঋণ দিতে দুটি জোট গঠন করেছে ১০ ব্যাংক মিলে। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১০০ একর জমির একাংশের ওপর গড়ে তোলা হচ্ছে এই কারখানা। 

এদিকে ইতিমধ্যেই কারখানার অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে, এখন চলছে যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ। আগামী বছরের মার্চের আগেই বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজের উদ্যোক্তারা।


দেশে স্থাপিত কারখানাতে বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রধান উপাদান গাড়ির মূল কাঠামো (বডি), ব্যাটারি, মোটর ও চার্জার তৈরি করা হবে। এতেই প্রায় ৭৫ শতাংশ অর্থ খরচ হবে। গাড়ির অভ্যন্তরীণ নকশা আমদানিতে খরচ হবে আরও ২৫ শতাংশ অর্থ। কারখানাতেই তৈরি গাড়ি পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর বাজারে ছাড়া হবে। পাশাপাশি সারা দেশে পেট্রল পাম্পে চার্জ সুবিধা চালুর পরিকল্পনাও করছেন উদ্যোক্তারা।


গাড়ির দাম কত হবে

এক চার্জে ২৫০ কিলোমিটার চলবে, এমন সেডান কারের দাম পড়বে ১২-১৩ লাখ টাকা। তবে এক চার্জে ৩৫০ কিলোমিটার চলা সেডান গাড়ির দাম পড়বে ১৬-১৭ লাখ টাকা।

উদ্যোক্তারা বলছেন, বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড যে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করবে, তা হবে বাংলাদেশের নিজস্ব ব্র্যান্ডের। এতে ১ বছরে ২ চাকার ৬০ হাজার,৩ চাকার ৪০ হাজার ও ৪ চাকার ৩০ হাজার গাড়ি উৎপাদন করা যাবে। এতে কর্মসংস্থান হবে দেড় হাজার মানুষের, পরে প্রকল্পের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়লে ৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।  

গাড়িগুলোর নকশা এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে, যাতে খুব স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করা যায়। এসব গাড়ি হবে কানেকটেড কার। অর্থাৎ গাড়িতে চার্জ–সুবিধা, ওয়াইফাই–সুবিধা যুক্ত থাকবে। ফলে গাড়িতে ওঠার পর কেউ কেউ অফিস শুরু করতে পারবেন। এসব গাড়ি চার্জ করার জন্য পাম্পে ব্যবস্থা থাকবে, আবার গাড়ির মালিকেরা নিজ বাড়িতেও চার্জ করতে পারবেন। বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জ–সক্ষমতার ওপর দাম নির্ধারণ করা হবে।

এক চার্জে ৩৫০ কিলোমিটার চলবে, এমন এসইউভি অথবা জিপের দাম পড়বে ২৩-২৫ লাখ টাকা। ৪০০ কিলোমিটার চলা গাড়ির দাম পড়বে ২৮-৩০ লাখ টাকা। এক চার্জে ২৫০ কিলোমিটার চলবে, এমন ৭ সিটের মাইক্রোবাসের দাম পড়বে ২০-২২ লাখ টাকা, ৩৫০ কিলোমিটার চলা গাড়ির দাম পড়বে ২৫-২৬ লাখ টাকা। ৪-৫ লাখ টাকায় মিলবে ৩ চাকার গাড়ি, যা এক চার্জে চলবে ২০০-২৫০ কিলোমিটার। কাভার্ড ভ্যান, ট্রাক, বাসের দাম হবে ১৫-৩০ লাখ টাকার মধ্যে।

এসব গাড়ি বাজারে ছাড়তে ইতিমধ্যে সব ধরনের নীতিমালা প্রণয়ন করেছে সরকার। উদ্যোক্তাদের দেওয়া হয়েছে করছাড়–সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ নীতিমালা, বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।

আমাদেরকাগজ/এমটি