অপরাধ ও দুর্নীতি ২ এপ্রিল, ২০২৩ ০৯:৪০

জুয়ায় হেরে ঋণ থেকে বাঁচতে নাহিদের খুন হওয়ার নাটক!

নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদী জুয়া খেলায় হেরে গিয়ে নিজ ঘরে রক্ত ছিটিয়ে নিখোঁজ হয়ে খুনের নাটক সাজান সিলেটের বিয়ানীবাজারের নাহিদ ইসলাম (২৮)। এ ঘটনার প্রায় ৪০ ঘণ্টা পর তাকে নরসিংদী থেকে আটক করেছে সিলেট জেলা পুলিশের একটি দল। রোববার, ২ এপ্রিল দুপুরে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান সিলেটের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

সিলেটের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গত শুক্রবার, ৩১ মার্চ সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের মাথিউরা পূর্বপার গ্রামের মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে মো. আব্দুল হেকিমের বাড়ির কেয়ারটেকার নাহিদ ইসলাম এই নাটক সাজান।

তিনি বলেন, নিখোঁজ হওয়া নাহিদের ঘরের আশপাশে ভালো করে তল্লাশি করে একটা বালতি ও মগে রং মেশানোর আলামত পাওয়া যায়। তখন এগুলো রক্ত কিনা,পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠালে তা মানুষের রক্ত বলে কেউ সুনির্দিষ্ট মতামত দিতে পারেননি। যদিও ঘরে রক্তের ছাপ দেখে প্রাথমিকভাবে এটি হত্যাকাণ্ড মনে হওয়াতে রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িতদের ধরতে বিয়ানীবাজার থানার একটি গোয়েন্দা দল অনুসন্ধান শুরু করেন। অবশেষে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নরসিংদী থেকে খুন হওয়ার নাটক সাজানো নাহিদকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। 

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, প্রায় ১৪ বছর ধরে নাহিদ বিয়ানীবাজার এলাকায় আছেন। কিন্তু তার প্রকৃত পরিচয় কেউ জানে না। তার বাড়ি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে। সেখানে অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় তিনি বর্তমান ঠিকানায় আত্মগোপনে ছিলেন। মূলত অনলাইন জুয়ায় জড়িত হয়ে বড় অঙ্কের টাকা তিনি ঋণী হয়ে যান। তিনি কৌশলে জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নাম পরিবর্তন করে নিজের স্থায়ী ঠিকানা গোপন রাখেন। তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে তিনি যে বাড়িতে ছিলেন, সেই বাড়িকে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করেন। প্রকৃতপক্ষে তার  নাম তাজুল ইসলাম। তিনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার বড়ভিটা পূর্বপাড়ার হোসেন আলী ও আম্বিয়া বেগম দম্পতির ছেলে। 

পুলিশ সুপার জানান, নাহিদের ঘর তল্লাশি করে তার নিজের হাতে লেখা একটা ডায়েরি পাওয়া যায়, তাতে অনেক দেনা-পাওনার হিসাব ছিল। তার মোবাইল তল্লাশি করে দেখা যায়- অল্প বেতনের কেয়ারটেকার হওয়া সত্ত্বেও তার মোবাইলে গড়ে প্রতিদিনই ২-৩ হাজার টাকা করে ট্রানজেকশন হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

আমাদেরকাগজ/ এইচকে