ধর্ম ও জীবন ১৮ মার্চ, ২০২৩ ০৬:২৭

যে দোয়া পড়লে অনবরত সওয়াব লেখা হয়

ধর্ম ডেস্ক: সওয়াবকে জান্নাতের কারেন্সি বলা হয়। দুনিয়াতে যার কাছে কারেন্সি ও অর্থ যত বেশি থাকে, তার জীবনযাত্রা তত উন্নত হয়, তেমনি জান্নাতেও যার অ্যাকাউন্টে সওয়াব যত বেশি থাকবে, সে তত বেশি প্রতিফল ভোগ করতে পারবে। জান্নাতে সব মানুষের মান নির্ণীত হবে সওয়াবের আধিক্যের মাধ্যমে।

নবীজি (স.) উম্মতকে সওয়াব অর্জনের নানা উপায় বাতলে দিয়েছেন। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হলো দোয়া। দোয়াকে বলা হয় ইবাদতের মগজ।

ইরশাদ হয়েছে, ‘মহান আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে অধিক সম্মানিত কোনো কিছু নেই’ (ইবনে মাজাহ: ৩৮২৯)। অহংকার করে যারা এই ইবাদত ছেড়ে দেয় তাদের উদ্দেশ্যে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। অহংকারবশত যারা আল্লাহর ইবাদত করে না, তারা লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা মুমিন: ৬০)

হাদিসে এমন কিছু দোয়ার উল্লেখ রয়েছে, যেসব দোয়া পড়লে সহজে বহু সওয়াব লাভ করা যায়। এখানে সহজ ও সংক্ষিপ্ত কয়েকটি দোয়ার আলোচনা করা হয়েছে, যেগুলো অগণিত সওয়াব লাভের উপায়। 

১)  سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ خَلْقِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ رِضَا نَفْسِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ زِنَةَ عَرْشِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ উচ্চারণ: ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি আদাদা খলকিহি, ওয়া রিদ্বাকা নাফসিহি, ওয়া যিনাতা আরশিহি, ওয়া মিদাদা কালিমাতিহ।’ অর্থ: ‘আমি আল্লাহ তাআলার পবিত্রতা ও তাঁর প্রশংসা বর্ণনা করছি, তার সৃষ্টিসংখ্যা পরিমাণ, তার মর্জি অনুযায়ী, তার আরশের ওজন পরিমাণ এবং তার কালামের কালির পরিমাণ।’
জুআয়রিয়াহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ভোরে আমার কাছ থেকে ঘরের বাইরে গেলেন এবং আমি জায়নামাজে বসে আল্লাহর জিকির করছিলাম, বেলা বাড়লে বা দিনের অর্ধেক অতিবাহিত হলে— রাসুলুল্লাহ (স.) ঘরে ফিরে এলেন। তখনও আমি একই অবস্থায় জায়নামাজে ছিলাম। তা দেখে রাসুল (স.) আমাকে বললেন, আমি যাওয়ার সময় তোমাকে যে অবস্থায় দেখেছি, এখনো কি তুমি সেই আগের অবস্থায় রয়ে গেছ? আমি বলেছি হ্যাঁ। রাসুল (স.) বললেন, আমি তোমার কাছ থেকে যাওয়ার পর যে চারটি কলেমা পাঠ করেছি, তা যদি তোমার সকাল থেকে এই পর্যন্তের সব অজিফার বিপরীতে ওজন করা হয়, তাহলে এই চারটি কলেমার ওজন বেশি ভারী হবে। (মুসলিম: ৬৮০৬ ও ২৭২৬; ইবনে মাজাহ: ৩১৪০; তিরমিজি: ৩৫৫৫; নাসায়ি: ১৩৫২; আহমদ: ২৬২১৮; আবু দাউদ: ১৩৪৭)

২) سبحان الله وبحمده উচ্চারণ: ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি। অর্থ: ‘আল্লাহ পবিত্র এবং সমস্ত প্রশংসা তাঁরই।’ কোনো কোনো আলেম দোয়াটির অর্থ এভাবে বর্ণনা করেছেন, আমি আল্লাহর সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করছি।

এই দোয়ার ব্যাপারে হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা ১০০ বার এই দোয়া পড়বে, কেয়ামতের দিন তার চেয়ে বেশি নেকি নিয়ে কেউ আল্লাহর দরবারে হাজির হতে পারবে না। তবে যারা এই দোয়ার আমল করে, তারা ছাড়া।’ (মুসলিম: ২৬৯২)
৩)  سبحان الله العظيم وبحمده উচ্চারণ: ‘সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়া বিহামদিহি’। অর্থ: ‘আল্লাহ পবিত্র, মহান-শ্রেষ্ঠতর। সব প্রশংসা তারই।’

হাদিসে আছে— ‘যে ব্যক্তি সকালে ঘুম থেকে জেগে উঠে ১০০ বার বলবে ‘সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়া বিহামদিহি’ এবং সন্ধ্যায় উপনীত হয়েও অনুরূপ বলবে, সৃষ্টিকুলের কেউ তার সমপরিমাণ মর্যাদা ও সাওয়াব অর্জন করতে পারবে না। (আবু দাউদ: ৫০৯১)

আমাদেরকাগজ/এইচএম