অপরাধ ও দুর্নীতি ৬ মার্চ, ২০২৩ ০৮:৫৮

হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাই, আটক ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোর অভয়নগরের ইজিবাইকচালক রাশেদ খুনের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেটিগেশন (পিবিআই)। রাশেদ হত্যার নেপথ্যে একটি ইজিবাইক ছিনতাই। এই হত্যার সাথে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। নিহত রাশেদ উদ্দিন যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানার গদখালী গ্রামের মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ইজিবাইক চালক।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জান্নাত আক্তার ওরফে আয়েশা ও মো. মেহেদী হাসান ওরফে মিলন এবং মো. রিমন বিশ্বাস ওরফে বাবু। সোমবার,৬ মার্চ বিকালে পিবিআইয়ের সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পিবিআই জানায় , ২৪ ঘন্টার মধ্যে যশোরের অভয়নগরে ইজিবাইক চালক রাশেদ হত্যা রহস্য উদঘাটন সহ হত্যার সাথে জড়িত ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের তিনজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই যশোর জেলা। গ্রেপ্তারকৃতরা প্রত্যেকেই ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের সক্রিয় সদস্য। চলতি বছরের গত ৪ মার্চ দিনের বেলা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে যশোর ঝিকড়গাছা কিষ্ণনগর সহ যশোর কতোয়ালির মুড়লী মোড় এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পিবিআই বলছে, রাশেদ প্রতিদিনের মত ২ মার্চ সকাল সাতটার দিকে বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হয়। সন্ধ্যায় তিনি বড়িাতে না ফেরায় রাত আটটার দিকে তার মা রেহেনা খাতুন রাশেদ উদ্দিনের মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে কথা বলেন। এর পরের দিন বেলা ১১টার দিকে রাশেদের বাবা ঝিকরগাছা থানায় নিখোঁজ জিডি করতে যান। থানায় গিয়ে জসিম উদ্দিন জানতে পারেন যে, অভয়নগর থানায় একটি লাশ পাওয়া গেছে। সংবাদ পেয়ে জসিম উদ্দিন ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে তার ছেলে রাশেদের লাশ শনাক্ত করে। নিহত রাশেদের বাবা জসিমের ধারনা অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা রাশেদ উদ্দিনকে হত্যা করে তার ইজিবাইক চুরি করেছে। এই ঘটনায় যশোর জেলা পিবিআই জিডিমূলে ছায়া তদন্ত শুরু করে।

পিবিআই জানায়, রাশেদ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেছে। আর গ্রেপ্তারকৃত মেহেদী হাসান ওরফে মিলনের কাছ থেকে মৃত রাশেদ উদ্দিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত মো. মেহেদী হাসান মিলন, মো. রিমন বিশ্বাস ওরফে বাবু ও জান্নাত আক্তার ওরফে আয়েশা সংঘবদ্ধ ইজিবাইক ছিনতাই ও অজ্ঞান পার্টির সদস্য। তারা যশোরের বিভিন্ন এলাকায় ইজিবাইক ও ভ্যান ছিনতাই করে পরস্পর যোগসাজসে কেনা-বেচা করে থাকে। আসামি মেহেদী হাসান মিলনকে আসামি রিমন বিশ্বাস ওরফে বাবু ভুক্তভোগী রাশেদের ইজিবাইক ভাড়া ঠিক করে দেয়। আর মেহেদী হাসান মিলনের সাথে পরিকল্পনা করে কিভাবে ইজিবাইকটি ছিনতাই করবে? সেই পরিকল্পনানুযায়ী আসামি মেহেদী তার স্ত্রী জান্নাত আক্তার ওরফে আয়েশাকে নিয়ে রাশেদের ইজিবাইকটি রিজার্ভ ভাড়া করে।

পরিকল্পনানুযায়ী আসামি মেহেদী হাসান মিলন ও জান্নাত আক্তার ওরফে আয়েশা রাশেদ উদ্দিনের ইজিবাইকে চড়ে প্রথমে রাজগঞ্জ ঝাঁপা বাওড় এলাকায় বেড়াতে যায়। ঝাঁপা বাওড়ে থাকা ভাসমান ব্রীজে তারা কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে। একপর্যায়ে ইজিবাইক নিয়ে যশোরের অভয়নগর থানার ধোপাদী গ্রামের উলুর বটতলা থেকে মশরহাটিগামী ইটের সলিং রাস্তার ডান পাশে গেলে আসামি মেহেদী হাসান মিলন ইজিবাইক থামিয়ে নিজের পরনে থাকা রাবারের বেল্ট খুলে রাশেদের গলায় ফাঁস দিয়ে জোরে টেনে ধরে।  আসামি জান্নাত আকতার ওরফে আয়েশা রাশেদের দুই পা চেপে ধরে। এতে রাশেদ উদ্দিনের শরীর নিস্তেজ হলে আসামি মেহেদী হাসান মিলন ও তার স্ত্রী আয়েশা মিলে রাশেদের লাশ মো. আজিজুর রহমান সরদারের মাছের ঘেরের ফেলে দেয়। 

আসামিরা নিহত রাশেদের ইজিবাইক রাজারহাট এলাকায় এনে মিলনের বন্ধুর কাছে বিক্রি করে দেয়। পরে মেহেদী হাসান মিলন তার স্ত্রী জান্নাত আক্তার ওরফে আয়েশাকে নিয়ে ঝিকরগছা থানার কৃষ্ণনগর গ্রামে তার ভাড়া বাসায় চলে যায়।

আমাদেরকাগজ/ এইচকে