নিজস্ব প্রতিবেদক : খুলনার দুই সাংবাদিক আইসিটি আইনের ৫৭ ও ৬৬ ধারায় করা মামলায় খালাস পেয়েছেন। সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে খুলনায় সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ কণিকা বিশ্বাস এ রায় দেন। খুলনার স্থানীয় দৈনিক সময়ের খবর পত্রিকার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কাজী মোতাহার রহমান ও নিজস্ব প্রতিবেদক সোহাগ দেওয়ান। সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০১৭ সালের ১৪ জুন ওই দুই সাংবাদিকের নামে সদর থানায় মামলাটি করেন খুলনার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা তপন কুমার সাহা। আইসিটি আইনের ৫৭ ও ৬৬ ধারায় মামলাটি করা হয়েছিল।
রায়ে বলা হয়, ‘৫৭ ও ৬৬ ধারায় করা মামলায় কাজী মোতাহার রহমান ও সোহাগ দেওয়ানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেওয়া হলো।’
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ২০১৭ সালের ১৮ মে কর্মচারী নিয়োগে জটিলতাসংক্রান্ত সংবাদ স্থানীয় দৈনিক সময়ের খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বোর্ড সভাপতি অতিরিক্ত সিএমএম পদত্যাগপত্র জমা দিলে ১৯ মে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করেন মহানগর দায়রা জজ। এ ছাড়া সিএমএম আদালতে একটি চেকের মামলার রায়ের সংবাদ ২২ মে একই পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এই দুটি সংবাদকে মিথ্যা ও ভুল আখ্যা দিয়ে যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ও ৬৬ ধারায় সদর থানায় মামলা করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলা হওয়ার পর তা তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মো. আফাজ আহমেদ। এই মামলার মোট ১২ জন সাক্ষীর সবাই আদালতে সাক্ষ্য দেন।
ছয় বছর পর খুলনা বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলার রায় ঘোষণা করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পিপি এম সাজ্জাদ হোসেন ও এপিপি রোকেয়া খানম। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী চৌধুরী তৌহিদুর রহমান তুষার।
তিনি বলেন, ‘এ রায় যুগান্তকারী। সিএমএম আদালতের নির্দেশেই মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয়েছিল। দুই আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের মামলা থেকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। এখানে প্রকাশিত সংবাদ যে সঠিক ছিল, সেটাই প্রমাণিত হলো।’
আসামিপক্ষের আরেক আইনজীবী অচিন্ত কুমার বলেন, ‘সংবাদপত্রের কাজ সত্য তুলে ধরা। যে সংবাদের কারণে মামলাটি করা হয়েছিলো, সেটি অতিউৎসাহী হয়ে করা হয়েছিল। এ রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
সাংবাদিক সোহাগ দেওয়ান বলেন, ‘সাইবার ট্রাইব্যুনালের রায়ে আমরা খুশি। ন্যায়বিচার পেয়েছি।
আমাদেরকাগজ/ এইচকে