রাজনীতি ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০৩:৫৫

শিবির সন্দেহে ছাত্রলীগের ‘নির্যাতন’, আইসিইউতে দুই ছাত্র

আমাদের কাগজ রিপোর্ট: শিবির সন্দেহে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) শাখা ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির দুই ছাত্রকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ওই দুই ছাত্রকে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।

দুই ছাত্র হলেন জাহিদ হোসেন ওরফে ওয়াকিল (২২) সাকিব হোসেন (২২) ছাত্রশিবির সন্দেহে গত বুধবার রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসে তাঁদের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ।
একই সময় এস রায়হান (২১) মোবাশ্বির হোসেন (২২) নামের অপর দুই ছাত্রকে নির্যাতন করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

নির্যাতনের শিকার ছাত্রই চমেকের ৬২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

চমেক সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী ওই চার ছাত্রকে ছাত্রাবাসের নিজ নিজ কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যান। পরে তাঁদের অন্য একটি কক্ষে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনে তাঁদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। গতকাল সন্ধ্যার দিকে তাঁদের বাড়িতে চলে যেতে বলা হয়। রায়হান মোবাশ্বির বাড়িতে ফিরে যান। জাহিদ সাকিব চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। তখন ঘটনা জানাজানি হয়।

চিকিৎসাধীন দুই ছাত্রের বিষয়ে চমেক অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার বলেন, দুজনের অবস্থাই স্থিতিশীল। তাঁদের জীবনের আশঙ্কা নেই। তবে একটু ভালোভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য তাঁদের আইসিইউতে রাখা হয়েছে।

সাহেনা আক্তার বলেন, চমেকে রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তারপরও কেন এই ঘটনা ঘটল, কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা চমেকের অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি খতিয়ে দেখছে।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী চমেক ছাত্রলীগের কয়েক নেতা-কর্মী ঘটনায় জড়িত বলে চমেক সূত্রে জানা গেছে। তবে ভুক্তভোগী ছাত্ররা কারও নাম বলেননি বলে পুলিশ চমেক কর্তৃপক্ষ জানায়।

অভিযোগের বিষয়ে চমেক ছাত্রলীগের মহিবুলপন্থী গ্রুপের নেতা অভিজিৎ দাশ সাংবাদিকদের বলেন, তারা (চার ছাত্র) শিবির করেন। গোপনে এই কাজগুলো তারা করে যাচ্ছিলেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মারা হয়নি।

নগরের চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনজুর কাদের মজুমদার বলেন, আহত ছাত্রদের বিরুদ্ধে ছাত্রশিবিরের কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে। তবে কারা তাদের মেরেছেন, তা তাঁরা বলেননি। তবু আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

চমেকে ছাত্রলীগের দুটি ধারা সক্রিয়। মহিবুলের বাইরে সাবেক সিটি মেয়র নাছির উদ্দীনের একটি পক্ষ চমেকে সক্রিয়।
২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারির পর চমেক বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তখন মারামারিতে মহিবুলপন্থী মাহাদি জে আকিব নামের এক ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তাঁর মাথার খুলির হাড় ভেঙে গিয়েছিল। এরপর চমেক ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

 

 

 

 

 

আমাদের কাগজ/টিআর