বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১২:১৯

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর অনমনীয় মনোভাবের কারণে অবশেষে প্রতিনিধি নিয়োগ ও আইন মানতে রাজি ফেসবুক

বাংলাদেশে স্থানীয় প্রতিনিধি নিয়োগসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মেনে চলতে ফেসবুক পূর্ণ সম্মতি দিয়েছে বলে জানিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিটিআরসি মিলনায়তনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সঙ্গে ফেসবুকের উচ্চ পর্যায়ের ৮ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সমন্বয় বৈঠকে এ সম্মতি মিলেছে।

এর আগে একাধিকবার উচ্চ পর্যায়ে বৈঠিক অনুষ্ঠিত হলেও রাজি করানো যায়নি ফেসবুককে। কিন্তু ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর অনড় অবস্থানের কাছে এবার নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে ফেসবুক।

বৈঠকে মোস্তাফা জব্বার পর্নোগ্রাফি, সন্ত্রাস-নৈরাজ্য, গুজব রটানো, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, অপপ্রচার ও সামাজিক নিরাপত্তাসহ বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের নিয়ম-নীতি মেনে নিরাপদ ফেসবুক ব্যবহারের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশ, আমাদের সমাজ ও আমাদের নাগরিকদের ফেসবুকের নিরাপদ ব্যবহারের সুযোগ দিতে হবে।’ মন্ত্রী বাংলাদেশের আইন, আবহমান বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি, মূল্যবোধ এবং নিয়মনীতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে আইন আছে, সেই আইন মোতাবেক ফেসবুককে কনটেন্ট এবং অন্যান্য বিষয় বাস্তবায়ন করতে হবে।’ 

উল্লিখিত বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখার বিষয়ে মন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে ফেসবুক প্রতিনিধিদল।

চার ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে নানা বিষয়ে আলোচনার মধ্যে নাগরিক সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় প্রত্যয়ের বিষয়টি প্রাধান্য পায়।

কনটেন্ট বিষয়ে বিদ্যমান যেকোনও সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য বাংলাদেশে অফিস খোলার বিষয়ে মন্ত্রী গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘রেসপন্স টাইমের বিষয়ে ফেসবুক যে দীর্ঘসূত্রতা করে, তা ইমিডিয়েট রেসপন্স টাইমে আনতে হবে।’

মন্ত্রী এ সময় ফেসবুকে সঠিকভাবে বাংলা ভাষায় অনুবাদ এবং প্রয়োগ করতে বলেন। এ সক্ষমতা অর্জনে ফেসবুককে সব ধরনের সহায়তারও আশ্বাস দেন তিনি।

এ সময় বৈঠকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক, বিটিসিএল মহাপরিচালক ইকবাল মাহমুদ, টেলিকম অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. মহসিনুল আলম, আইসিটি বিভাগের সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক পরিচালক তারেক এম বরকত উল্লাহ এবং সাইবার থ্রেট ডিটেকশন প্রকল্পের পরিচালক মো. রফিকুল মতিনসহ ডিজিএফআই, এনএসআই, র‌্যাব, এনবিআর, এনটিএমসি এবং এসবিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।

বৈঠকে ফেসবুকের আট সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন প্রতিষ্ঠানটির হেড অব সেফটি বিক্রম সেনগ। প্রতিনিধিদলের অপর সদস্যরা হলেন, ফেসবুক পাবলিক পলিসি বিষয়ক পরিচালক অশ্বনি রানা, শিবনাথ থাকরাল, পাবলিক পলিসি ম্যানেজার বরুণ রেড্ডি, সুমন্ত বিশ্বাস, প্রোডাক্ট লেভেল ট্রান্সলেটর টবি ফারনাল, পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রিসাব দারা, স্ট্র্যাটেজি ম্যানেজার ম্যাট স্যানসেন এবং ফেসবুক মোবাইল পার্টনার বিভাগের ইরম ইকবাল।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে এবং এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্পেনের বার্সেলোনায় ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেসের সাইড লাইনে ফেসবুকের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মন্ত্রীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকায় উচ্চপর্যায়ের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।