অপরাধ ও দুর্নীতি ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০৬:২৬

আয়ের চেয়ে অতিরিক্ত সম্পদ

লক্ষ্মীপুরে আদালতের গাড়ি চালকের নামে দুদকের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:  লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের গাড়িচালক নুর হোসেন পাটওয়ারীর নামে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

চাকরিকালীন তার আয়ের চেয়ে অতিরিক্ত সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দুদকের চাঁদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন আহম্মদ এ মামলা করেন।

শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দুদক কার্যালয় থেকে গণমাধ্যমকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

তবে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেননি মামলার বাদী দুদকের চাঁদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন আহম্মদ।

নুর হোসেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ উল্যা পাটওয়ারীর ছেলে।

জানা গেছে, নুর হোসেন ১৯৯৩ সালে গাড়িচালক হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। তখন থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তিনি সাবেক বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রীর গাড়িচালক ছিলেন। পরে ১৯৯৮ সালে তিনি লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের গাড়িচালক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৬ সালে তিনি জান্নাতুন নুরকে বিয়ে করেন। তার সংসারে ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে।

মামলা সূত্র জানায়, চাকরিকালীন বেতন হিসেবে নুর হোসেন ৫৩ লাখ ৫৭ হাজার ৫৬২ টাকা আয় করেন। এর বিপরীতে ৮৪ লাখ ৫ হাজার ৪৫৩ টাকা তার অর্জিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। এ সম্পদ অর্জনের সময় ৫০ লাখ ৮৯ হাজার ৫১৪ টাকা তার ব্যয় পাওয়া যায়। পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৯৪ হাজার ৯৬৭ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। এতে তার আয়ের চেয়ে ৮১ লাখ ৩৭ হাজার ৪০৫ টাকার সম্পদ বেশি পাওয়া যায়।

এর মধ্যে তার স্ত্রী জান্নাতুন নুরের নামে সম্পদ রয়েছে। কিন্তু তিনি একজন গৃহিণী। তার কোনো আয়কর নথিও নেই। প্রাথমিকভাবে নুর হোসেনের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের প্রমাণ পাওয়া যায়। ২০২২ সালের ৩০ মে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের নোয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুবেল আহমেদ আসামির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। বর্তমানে লক্ষ্মীপুর দুদকের চাঁদপুর কার্যালয়ের অধীনে হওয়ায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুাযায়ী ১১ জানুয়ারি এ মামলা দায়ের করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে দুদকের মামলায় নুর হোসেনকে লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেন। দুদককে সম্পদের হিসাব না দেওয়ায় জামিন অযোগ্য হাওয়ায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন তিনি। সেসময় নুর হোসেনের ভাই ব্যবসায়ী আমির হোসেনের কাছেও সম্পদের হিসাব চায় দুদক। একই বছর ৭ সেপ্টেম্বর দুদকের নোয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুবেল আহমেদ তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।