জাতীয় ৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০৩:২৭

শীততাপে খেটে খাওয়া মানুষের দুশ্চিন্তা! সস্তি ফেরালো রোদ  

ছবি - সংগৃহীত

ছবি - সংগৃহীত

আমাদের কাগজ,নিজস্ব প্রতিবেদনঃ শীততাপের কথা শুনেই হতাশা প্রকাশ করেছেন খেটে খাওয়া মানুষ। কাজ না-করলে খাবেন কী, কীভাবে সংসার চালাবেন-এ চিন্তায় ঘুম হারাম তাদের। শীততাপ বেড়ে যাওয়ায় আজ সকাল ৬টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কোন কাজ পাননি নগরীর অনেক শ্রমজীবী। গায়ে খেটে যাদের প্রতিদিনের ইনকাম,সেখানে সকাল থেকেই সবকিছু বন্ধ। 

এদিকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে চলছে মৃদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এদিকে বৃহস্পতিবার(৫ জানুয়ারী) সকালের পর বেলা বাড়ার মাঝে ঝলমলে রোদের দেখা পেয়েছে ঢাকাবাসী এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ। এতে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বৃহস্পতিবার(৫ জানুয়ারী)এমন দৃশ্য দেখা মিলেছে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একাধিক রুটিরুজি নিয়ে চিন্তিত দরিদ্র মানুষ।

ছোট একটি খাবারের হোটেলের কর্মচারী বাবু মিয়া আমাদের কাগজকে বলেন, মাসে যা টাকা কামাই, কোনোমতে চলে। এর মধ্যে যদি শীততাপের অবস্থা এমন হয়, তাহলে পরিবার নিয়ে কীভাবে চলব, তা ভেবে পাই না। মাসিক কোন হোটেলে কামও পাইনা'। প্রতিদিন কিছু সংখ্যক দোকানে থালাবাসন ধোয়ার কাম করি। দুইদিন ধরে কামে যাইতে পারি না সকালে অনেক শীত লাগে তাই'। 

সরকারি সাহায্য না-পেলে এ কয়েকটা দিন না-খেয়ে থাকতে হবে।

 

মধ্যবয়সি রিকশাচালক সুবাহান মিয়া  আমাদের কাগজকে বলেন, দিন আনি, দিন খাই। যেদিন কামাই নাই, সেদিন খাওয়াও নাই-ঠিক এমনই অবস্থা। রিকশাও যদি না-চালাতে পারি, তাহলে সহায়তা না-পেলে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। শীতের দিনে সকালে রিকশা চালাইতে ভয় পাই,যদি ঠান্ডা জ্বরে ভুগি,ডাক্তারের খরচ কই থেকে আনব'। বাসায় আমি ছাড়াও আরও চারজন আছে। তাদের খাওয়াবে কে? সরকার যদি 
এখন আমাদের জন্য কিছু করতে না-চায়, তাহলে আমার মতো গরিব মানুষকে খাবারের নিশ্চয়তা কে দেবে'। 

ফল ব্যবসায়ী মোরশেদ ইসলাম বলেন, এমনিতেই ব্যবসায়ের অবস্থা তেমন ভালো না। এরপর সামনে রমজান ও ঈদ। এখনও যদি ব্যবসা না-করতে পারি, তাহলে পরিবার নিয়ে যাব কোথায়? খাব কী?

 

টং চায়ের দোকানি আরমান আলী যেন মাথায় হাত। দুশ্চিন্তায় তার ঘুম হারাম হয়ে গেছে। শীতের মধ্যে ১০টার আগে দোকানে আসতে পারেন না বলে। আবার রাত বেশি হলে রাস্তায় লোক জন কমে যাওয়া নিয়েও রয়েছে তার বিশাল অভিযোগ। 

তিনি জানান, দোকান না-চললে রাজধানীতে পরিবার নিয়ে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা তার নেই। তিনি বলেন,এই ভাবে চলতে থাকলে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাতে হবে। 

সম্প্রতি দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ায় ফলে জেলা ভিত্তিক বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে, যা আরও দুই-এক দিন অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে শনিবার (৭ জানুয়ারি) থেকে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।

এতে শীতের তীব্রতা কমবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সকালে সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান 

 

আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হামিদ মিয়া। তিনি বলেন, শনিবার (৭ জানুয়ারি)থেকে শীতের তীব্রতা কিছুটা কমে আসতে পারে। তবে দুই-এক দিন পর আবার শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে।

এ দিন রাজধানীর রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে শীততাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে কর্মমুখি মানুষদের।  

উল্লেখ্য, কয়েকদিন ধরে সূর্যের আলো এবং শীতের তীব্রতা কম থাকলেও বৃহস্পতিবার(৫ জানুয়ারী)আবারও শীত জেঁকে বসেছে। বইছে হিমেল হাওয়া।

আমাদের কাগজ/এম টি