উন্নয়ন সংবাদ ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১২:৪৫

মেট্রোরেলে কত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হবে

ছবি - সংগৃহীত

ছবি - সংগৃহীত

আমাদের কাগজ নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশের পরিবহন খাতে যুক্ত হচ্ছে মেট্রোরেল। প্রাথমিকভাবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে নতুন এ গণপরিবহন। জ্বালানির পরিবর্তে মেট্রোরেলে ব্যবহার করা হবে বিদ্যুৎ। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহের যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে চালু হতে যাওয়া উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১.৭৩ কিলোমিটার রেলপথ চলাচলে প্রয়োজন হবে ৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। আর উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচলে প্রতিদিন মোট ৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে।

বর্তমানে মেট্রোরেলের বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)। ডেসকো সূত্র জানায়, বৈদ্যুতিক ট্রেন পরিচালনার জন্য নিরবিচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহ বিবেচনা করে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ ডেসকোর উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র ও টঙ্গীর ২৩০/১৩২ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে দুটি ১৩২ কেভি লাইনের মাধ্যমে উত্তরা দিয়াবাড়ির মেট্রোরেলের নিজস্ব ১৩২/৩৩ কেভি উপকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে।

ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমীর আলী জানান, ডেসকো ২০২১ সালের ৮ মার্চ উত্তরার ১৩২/৩৩ কেভি উপকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়। এই রেল পরিচালনার জন্য ডেসকো প্রান্ত থেকে মোট ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। প্রাথমিকভাবে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ ৯ মেগাওয়াটের জন্য চুক্তি করেছে এবং বর্তমানে পরীক্ষার জন্য গড়ে ২ মেগাওয়োট ব্যবহার করছে।

চাহিদা অনুযায়ী মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ দেওয়ার জন্য ডেসকোর পূর্ণ প্রস্তুতি আছে।

বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, পাওয়ার গ্রিড অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) মূল তত্ত্বাবধানে ডেসকো, ডিপিডিসি সমন্বিতভাবে মেট্রোরেলের মোট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। কোনো কারণে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া না গেলে বিশেষ ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। বিশেষ পরিস্থিতিতে মেট্রোরেলের এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম (ইএসএস) থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে মেট্রোরেলকে নিকটবর্তী স্টেশনে নিয়ে আসা হবে।

আগামী বছর ডিসেম্বরে মতিঝিল পর্যন্ত চলাচল করবে দেশের প্রথম বিদ্যুৎ চালিত ট্রেন। আর কমলাপুর পর্যন্ত চলাচল করতে অপেক্ষা করতে হবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত। কমলাপুর পর্যন্ত রেল আসতে মোট ৭০ মেগাওয়াট চাহিদার মধ্যে ৩৫ মেগাওয়াট সরবরাহ করবে ডেসকো আর বাকিটুকু দেওয়ার কথা রয়েছে ডিপিডিসির।

উল্লেখ্য,স্বপ্নের মেট্রোরেলের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে মেট্রোর যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই মেট্রো ট্রেনে ছয়টি কোচে বসার আসন ৩১২টি এবং দাঁড়িয়ে যেতে পারবেন এক হাজার ৯৯৬ জন। 

আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও অংশে প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে ছুটবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মেট্রোরেল। যানজটে অতিষ্ঠ রাজধানীতে মাত্র পৌনে ১২ কিলোমিটার উড়াল-রেলপথে মাত্র ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ডে উত্তরা থেকে আগারগাঁও চলে আসবে মানুষ।

তবে প্রথমদিকে সীমিত পরিসরে চলবে মেট্রোরেল, সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। ১০ মিনিট পরপর ট্রেন চলবে, মাঝপথে কোথাও থামবে না। আপাতত প্রতি মঙ্গলবার বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর উত্তরার ১৫ নম্বর সেক্টরের মাঠে মেট্রোরেলের উদ্বোধন ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করে বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ (বিটিভি) বিভিন্ন সম্প্রচার মাধ্যম।

আমাদের কাগজ/ এম টি