জাতীয় ২২ ডিসেম্বর, ২০২২ ০১:৩১

 সংসদ থেকে পদত্যাগ করলেন বিএনপির হারুন

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় সংসদ ভবনে এসে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে বিএনপির সব সংসদ সদস্যের পদত্যাগ নিশ্চিত হলো।

পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর হারুন বলেন, ‘বর্তমান সংসদ মহাজোটের দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে।বর্তমান সংসদকে অবিলম্বে বিলুপ্ত করতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।’

মহাজোটের শরিকদের পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায়, বিএনপি ও তার জোট আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে দেশে কোনও অর্থবহ নির্বাচন হবে না।’ ‘সরকারের নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের বার্তা দিয়েছে এ পদত্যাগ’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সদ্য পদত্যাগ করা সাবেক সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন ও জিএম সিরাজ। এর আগে জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে সশরীরে পদত্যাগপত্র জমা দেন বিএনপির পাঁচ সংসদ সদস্য। গত ১১ ডিসেম্বর বেলা ১১টা ২০ মিনিটে সংসদ ভবনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর দফতরে যান তারা। গত ১০ ডিসেম্বর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির সমাবেশে সংসদ সদস্য পদ ছাড়ার ঘোষণার পরদিন তারা সংসদে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন

বিএনপির সাত সংসদ সদস্যের মধ্যে আব্দুস সাত্তার অসুস্থ থাকায় এবং হারুনুর রশিদ বিদেশে থাকায় অনুপস্থিত ছিলেন। তবে হারুনুর রশিদ তবে ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র দিয়েছিলেন।

তখন স্পিকার বলেছিলেন, সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ বিদেশে থাকায় অনুপস্থিত রয়েছেন এবং সংসদ সদস্য আব্দুস সাত্তার অসুস্থ থাকায় সংসদ সচিবালয়ে তার সই মিলিয়ে দেখবেন এবং কথা বলবেন। সব ঠিক থাকলে তার পদত্যাগপত্রও গৃহীত হবে। তবে ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগ পত্র দেওয়ায় হারুনুর রশীদের আবেদন গ্রহণ হবে না, তাকে পরে এসে জমা দিতে হবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সশরীর তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।

১০ ডিসেম্বর সমাবেশে সংসদ সদস্যরা জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুসারে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে তারা জাতীয় সংসদে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন।

৩৫০ আসনের সংসদে বিএনপির সাত সংসদ সদস্য হলেন উকিল আব্দুস সাত্তার (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২), হারুনর রশীদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), জি এম সিরাজ (বগুড়া-৭), আমিনুল ইসলাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২), জাহিদুর রহমান (ঠাকুরগাঁও-৩), মোশাররফ হোসেন (বগুড়া-৪) ও রুমিন ফারহানা (সংরক্ষিত নারী আসন)।

২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে ভোটে অংশ নিয়েছিল। সেই নির্বাচনে বিএনপির ছয়জন বিজয়ী হন, পরে সংরক্ষিত নারী আসনের একটি পায় দলটি। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে শুরুতে বিএনপি জানিয়েছিল, তারা সংসদে যাবে না। পরে সিদ্ধান্ত বদলে শপথ নেন দলটির সংসদ সদস্যরা।

সদস্যদের আসন শূন্য হওয়ার বিষয়ে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৭ (২) এ বলা হয়েছে, কোনও সংসদ সদস্য স্পিকারের কাছে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করতে পারবেন এবং স্পিকার কিংবা স্পিকারের পদ শূন্য থাকলে বা অন্য কোনও কারণে স্পিকার স্বীয় দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে ডেপুটি স্পিকার যখন উক্ত পত্রপ্রাপ্ত হন, তখন থেকে উক্ত সদস্যের আসন শূন্য হবে।

আমাদেরকাগজ/ এইচকে