ধর্ম ডেস্ক: সন্তান জন্মের পর নবজাতককে প্রথমে পরিষ্কার করে ডান কানে আযান এবং বাম কানে ইকামত দেওয়া সুন্নত। জীবনের শুরুতে তার কানে এই বার্তা পৌঁছে দিন যে, আপনার জীবন আল্লাহ তায়ালার জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। এর নিয়ম আপনার জন্য প্রযোজ্য। রাসুল (সা.) হজরত হাসান (আ.)-এর কানে নামাজের আযান দেন। (তিরমিযী)
হযরত হোসাইন রা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যার সন্তান আছে, সে যেন তার ডান কানে আযান এবং বাম কানে ইকামত পাঠ করে। -(মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদীস)
শুআবুল ঈমানের বর্ণনায় আছে, ফাতিমা (রা.) যখন আলী (রা.)-এর ছেলে হাসান (রা.)-কে প্রসব করলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তার ডান কানে নামাজের আজানের ন্যায় আজান দিয়েছিলেন। এবং বাম কানে ইকামত দিয়েছিলেন। (শুআবুল ইমান, হাদিস : ৮৬২০)
নবজাতকের কানে কী কারণে আজান দেওয়া হয় এ বিষয়ে ওলামায়ে কেরামের অনেক ব্যাখ্যা রয়েছে। কেউ কেউ লিখেছেন, শিশুর কানে আজান-ইকামত দেওয়ার অর্থ হলো তাকে এই কথা বলে দেওয়া যে আজান-ইকামত হয়ে গেছে, এখন শুধু নামাজের অপেক্ষা (নামাজ শুরু হতে সামান্য বিলম্ব, তা-ই তোমার জীবন)।
হজরত থানভি রহ. বলেন, ‘আজান-ইকামতের মাধ্যমে শিশুর কানে প্রথমেই আল্লাহর পবিত্র নাম পৌঁছে দেওয়া, যেন তার প্রভাবে তার ঈমানের ভিত্তি মজবুত হয়ে যায় এবং শয়তান দূরে সরে যায়। এই দুটি হিকমতেরই সারমর্ম হলো দুনিয়াতে আসার পর তুমি আল্লাহকে ভুলে গাফেল হয়ে থেকো না। ’ (তরবিয়তে আওলাদ, হজরত থানভি রহ.)
এ ব্যাপারে আবুল হাসান আলী নদভি রহ. বলেন, আজান ও ইকামত শুধু নামাজের জন্য নির্দিষ্ট। আর নবজাতক শিশু নামাজ তো দূরের কথা—এই আজান-ইকামতের মর্ম ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কিছুই বোঝে না। তাহলে তার কানে আজান-ইকামত বলার উদ্দেশ্য কী? উদ্দেশ্য সম্ভবত এই যে কোনো কিছু পৌঁছবার আগে শিশুর কানে সর্বপ্রথম আল্লাহর নামাজ ও তাঁর ইবাদতের ডাক গিয়ে যেন পৌঁছে।
সন্তান ভূমিষ্ঠের পর সাধারণত বাবা, দাদা-নানা অথবা সেখানে উপস্থিত পুরুষেরা তাদের কানে আজান দিয়ে থাকে। কিন্তু কোনও কারণে যদি কখনও শিশু জন্মের সময় কোনও পুরুষ উপস্থিত না থাকে, তাহলে মহিলারা তুলনামূলক নিচু স্বরে বাচ্চার ডান কানে আজা এবং বাম কানে ইকামত দিতে পারবে। তবে বেশি উঁচু আওয়াজে দিবে না।
আমাদেরকাগজ/এইচএম