সারাদেশ ১৮ নভেম্বর, ২০২২ ০৭:৪১

সার বলে মাটি বিক্রি করতেন ডিলার

ছবিঃ ইন্টারনেট

ছবিঃ ইন্টারনেট

আমাদের কাগজ ডেস্কঃ সার কেনার পর সারের প্যাকেট খুলে দেখতে পান, সারের পরিবর্তে প্যাকেটে মাটি ভর্তি। শুনতে কিছুটা  অবাক লাগলেও সত্যি! দীর্ঘ প্রায় ২০-২৫ বছর এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে আসছিল। অতপর' বুধবারও (১৬ নভেম্বর) স্থানীয় জনগণকে ঠকিয়ে সার বলে মাটি বিক্রি করে হাতেনাতে ধরা । এরপর ভুক্তভুগি কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শরণাপন্ন হন। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে জিংক সালফেট সারের নামে মাটি মিশিয়ে বিক্রি করার দায়ে এক ডিলারকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।  বুধবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এ কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গোমস্তাপুর উপজেলার দলদলী ইউনিয়নের মুশরীভূজা-জামতলা বাজারের মেসার্স ভাই ভাই রকমারি স্টোরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। 

জানা যায়, ডিলারের কাছ থেকে জিংক সালফেট সার কিনে জমিতে প্রয়োগ করেন কৃষকরা। তবে তা কোনো কাজে আসেনি। সার প্রয়োগের এক দিন পরই তা গলে মাটির সঙ্গে মিশে যায়। কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটলে সন্দেহ হয় কৃষকদের। যাচাই-বাছাই করে দেখা যায় জিংক সালফেট নয়, সেগুলো ছিল মাটি। এরপর কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শরণাপন্ন হন। 

এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম। মেসার্স ভাই ভাই রকমারি স্টোরের মালিক ও সারের ডিলার আলহাজ মো. দুরুল হোদার ছেলে  মো. আখতারুলকে এ কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 

স্থানীয় কৃষক আব্দুল গনি বলেন, ভোলাহাট কৃষিপ্রধান এলাকা। এখানে আম, ধানসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করেন কৃষকেরা। জিংক সালফেট সারের নামে তাতে মাটি মিশিয়ে বিক্রি করত দুরুল হোদা। কিন্তু কৃষকরা প্রতারিত হয়ে বাধ্য হয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কৃষি বিভাগকে জানিয়েছে। ধানে সার দেয়ার পর কোন কাজ হচ্ছিল না দেখেই এই সন্দেহ হয় আমাদের।

স্থানীয় যুবক জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত ১৫-২০ বছর আগেও একই অভিযোগে তার শাস্তি হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরেই কৃষকদের সাথে দুরুল হোদা এমন প্রতারণা করে আসছিল। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের নিকট তার ডিলারশীপ বাতিল করার অনুরোধ করা হয়েছে।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সার ক্রেতা শ্রী ভাদু কর্ম্মকার সার কেনার পর সারের প্যাকেট খুলে দেখতে পান, সারের পরিবর্তে প্যাকেটে মাটি ভর্তি। এক পর্যায়ে আলহাজ্ব দূরুল হোদার ছেলে আকতারুল ইসলাম ও কর্মচারীর সাথে কথা কাটাকাটি হয়। পরে স্থানীয় জনসাধারণ ক্ষীপ্ত হয়ে দোকানে বসা আকতারুল ও কর্মচারীর উপর চড়াও হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কৃষক ও স্থানীয় জনতার প্রতি আহবান জানান।

দলদলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোজাম্মেল হক চুটু মোবাইল ফোনে জানান, ডিলার আলহাজ্ব দূরুল হোদা দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। ২০-২৫ বছর এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে ছিল। বুধবারও জনগণকে ঠকিয়ে সার বলে মাটি বিক্রি করে হাতেনাতে ধরা খেয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক উম্মে তাবাসসুম মোবাইল ফোনে বলেন, কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে এই জালিয়াতি প্রমাণিত হওয়ায় ও কৃষকদের দাবির প্রেক্ষিতে সভা করে তার সার ডিলারশীপ বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হবে।

 

আমাদের কাগজ/এম টি