সারাদেশ ১৭ নভেম্বর, ২০২২ ০৭:১৩

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর

ডলার সংকটে বেকার হওয়ার শঙ্কায় ১০ হাজার শ্রমিক

পঞ্চগড় প্রতিনিধি: ডলার সংকটের কারণে চাহিদা অনুযায়ী এলসি পরিশোধ করতে না পারায় পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে পাথর আমদানি স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে দেশের একমাত্র চতুর্ভুজ স্থলবন্দরের ১০ হাজার শ্রমিক বেকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আগের এলসিতে পাথরসহ অন্যান্য পণ্য সীমিত আকারে আমদানি-রপ্তানি করা হতো। তবে পাথর নির্মিত এ বন্দরে পর্যাপ্ত আমদানি না হওয়ায় এক ধরনের স্থবিরতা চলছে।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি অবস্থানগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। বর্তমানে বন্দরের কুলি শ্রমিক, লোড-আনলোড শ্রমিক, পাথর ভাঙা শ্রমিক, ব্যবসায়ীসহ ২০ হাজারের বেশি মানুষ প্রত্যক্ষভাবে পাথর আমদানির সঙ্গে জড়িত।

বন্দর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দর দিয়ে চাল, গম, ভুসি, ভুট্টাসহ খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। কিন্তু চলমান ডলার সংকটের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের প্রায় এক মাস ধরে কোনো ব্যাংকে পাথর আমদানির এলসি খোলা হচ্ছে না। এখন যা আসছে তা হল আগের এলসি পাথর। এরপর কবে নতুন এলসি পাথর আমদানি হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। স্থলবন্দরের শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা বেকার হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের লোড আনলোড শ্রমিক আবদুল জব্বার বলেন, ভারত ও ভুটান থেকে আসা পাথর দিয়েই বন্দর জমজমাট থাকতো। এখন আগের মতো পাথর আসে না। ফলে কাজের অপেক্ষায় সারাদিন বসে থাকি। যে পরিমাণ পাথর আসে তা লোড আনলোডে সব শ্রমিকের প্রয়োজন হয় না। আমরা চাই অন্য মালামালের সঙ্গে আগের মতো পাথর আমদানি হোক। তা না হলে ১০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যাবো।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক মো. নাসিমুল হাসান নাসিম বলেন, এ বন্দর দিয়ে ভারত, নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্য হয়। প্রায় মাসখানেক আগে থেকে ব্যাংকে এলসি না হওয়ায় স্থলবন্দরের ৫০০ শ্রমিক এবং এর বাইরে আরও ১০ হাজার শ্রমিক প্রায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এভাবে চললে শুধু শ্রমিক নয়, আমদানি-রপ্তানিকারক, ব্যবসায়ীসহ সবাই কর্মহীন হয়ে পড়বো। এই সমস্যা সমাধানে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরত ই খোদা মিলন বলেন, বাংলাবান্ধা একটি চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর এবং আমদানিকৃত পণ্যের ৯০ শতাংশই পাথরের। আমদানি করা পাথরের ওপর ভিত্তি করে এখানে প্রায় ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। বর্তমানে ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা ব্যাংকে এলসি খুলতে পারছেন না। যে কারণে পাথর আমদানি প্রায় বন্ধ। ফলে বেকার হয়ে পড়ছেন ১০ হাজার শ্রমিক।


আমাদেরকাগজ/এইচএম