বিনোদন ডেস্ক: রবি ঠাকুরের বিনোদিনী খ্যাত বিশ্ব সুন্দরীর মুকুট মাথায় নিয়ে নব্বই দশকের শেষ দিকে বলিউডে পা রাখা ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন পেরিছেন জীবনের ৪৯ বসন্ত। ভারতের কর্ণাটকের কৃষ্ণরাজ ও বৃন্দা রায় দম্পতির কোল আলো করে আসে ফুটফুটে এক কন্যাসন্তান। সদ্যজাত শিশুর নাম রাখা হয় ঐশ্বরিয়া এবং পদবী হিসেবে নামের শেষে যুক্ত হয় রাই। পরিবারের দ্বিতীয় এবং কনিষ্ঠ সন্তান হিসেবে তিনি ছিলেন সকলের আদরের। বিয়ে আর সংসারজীবনে প্রবেশের পর ধীরে ধীরে কাজ কমিয়ে দিলেও তার অভিনয় ও নাচ গেঁথে আছে দর্শকমনে ।
১৯৭৩ সালের ১ নভেম্বর জন্ম নেওয়া এ নায়িকা অভিনয় জগতে পা রাখেন তামিল নাটক দিয়ে। আর তার বলিউড যাত্রা শুরু হয় ‘পেয়ার হো গায়া’।
‘হাম দিল দে চুকে সনম, তাল, মোহাব্বাতে, গুরু, দেবদাস, যোধা আকবর সহ বহু সিনেমায় বচ্চন পরিবারের পুত্রবধূ ঐশ্বরিয়া অভিনয় দক্ষতা আর নাচ দিয়েও নিজেকে করেছেন স্মরণীয়।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রেমগাথা ‘দেবদাস’ অবলম্বনে সঞ্জয় লীলা বানসালি ২০০২ সালে নির্মাণ করে হিন্দি সিনেমা ‘দেবদাস’। বিপুল বাজেটের আলোচিত ওই সিনেমায় ‘দেবদাস’ হয়ে আসেন শাহরুখ খান। পার্বতী চরিত্রে ঐশ্বরিয়ায় এবং চন্দ্রমুখী চরিত্রে ছিলেন মাধুরী দীক্ষিত।
সিনেমায় ‘ডোলা রে ডোলা’ গানে মাধুরীর সঙ্গে দ্বৈত নাচে নানা মুদ্রায় নিজেকে মেলে ধরেন ঐশ্বিরিয়া। ভারতের জনপ্রিয় মিডিয়াগুলোর বিচারে ওই নাচে মিলেছে মাধুরী-ঐশ্বরিয়ার ‘অনবদ্য’ রয়াসন।
নির্মাতা সঞ্জয় লীলা বানসালির আরেনকটি সিনেমা ‘হাম দিল দে চুকে সনম’। এই হিট সিনেমায় ‘নিমুরা নিমুরা’ গানে নীল ঘাগড়ায় ঝড় তোলেন ঐশ্বরিয়া।
১৯৯৯ সালে গান আর সুরের জন্য তুমুল জনপ্রিয়তা পায় ‘তাল’। অনিল কাপুর ও অক্ষয় খান্নার সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। সিনেমায় ‘তাল সে তাল মিলা’ গানে সাধারণ সাজ পোশাকে ঐশ্বরিয়ার নাচ সাড়া তোলে। পরিচালক ছিলেন সুভাষ ঘাই, সংগীত পরিচালনা করেন এ আর রহমান।
‘হাম দিল দে চুকে সানম’ সিনেমায় ‘ঢোলি তারো ঢোল বাজে’ গানে ঢোলের তালে লাল ঘাগড়ায় ঐশ্বরিয়ার নাচ পর্দাকে করে তোলে রঙিন। এনডিটিভি লিখেছে, এখনও ওই গান ও নাচ ছাড়া ‘নবরাত্রি’ উদযাপন যেন অসম্পূর্ণ।
২০০৬ সালে ‘উমরাও জান’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন ঐশ্বরিয়া ও অভিষেক বচ্চন। সেই সিনেমায় ‘সালাম’ গানে নতর্কীর বেশে ধ্রুপদী নাচ ও অভিনয়ে দর্শক মাতান সাবেক এই বিশ্ব সুন্দরী।
এক অনন্য প্রাকৃতিক পরিবেশে ‘গুরু’ সিনেমায় ‘বারসো রে মেঘা মেঘা’ গানে ঐশ্বরিয়ার নাচ তৈরি করে ভিন্ন আবহ। ২০০৭ সালে পরিচালক মণিরত্নমের সিনেমাটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে তার অসামান্য অভিনয় দক্ষতার কারণে তিনি ভারত সরকারের কাছ থেকে পদ্মশ্রী সম্মাননা অর্জন করেন। ২০১২ সালে অর্জন করেন ফ্রান্সের অরড্রি ডেস আর্টস অ্যাট ডেস লেট্রিস পুরস্কার।
এখানেই শেষ নয়, ২০০৪ সালে বিখ্যাত মাদাম তুসোর জাদুঘরে তার প্রতিমূর্তি স্থাপন করা হয়। নেদারল্যান্ডের কেউকেনহফ গার্ডেনে তার নামে একটি টিউলিপ ফুলের নাম রাখা হয়। ফ্রান্সেও তার জনপ্রিয়তা রয়েছে।
আমাদের কাগজ/ইদি