সারাদেশ ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ০৩:২৯

ড্রেজারডুবিতে নিখোঁজ ৮ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের বঙ্গোপসাগরের সন্দীপ চ্যানেলে ড্রেজার ডুবে নিখোঁজ আট শ্রমিকের সবার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে বশর হাওলাদারের (৩৫) মরদেহ উদ্ধারের পর উদ্ধার অভিযান শেষ করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন।

এর আগে আজ সকাল ৯টার দিকে শাহিন মোল্লার (৩৫) সাড়ে ৯টায় তারেক মোল্লার (২৮) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে রহমান ফকিরের ছেলে মো. আল-আমিন ফকিরকে প্রথম উদ্ধার করা হয়। পরদিন বুধবার সকালে আনিচ মোল্লার এক ছেলে ইমাম হোসেন মোল্লা, আব্দুল হক মোল্লার ছেলে মাহমুদ মোল্লা সেকান্দার বারির ছেলে মো. জাহিদ বারিকে একসঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছিল। একই দিন রাত ১১টায় উদ্ধার করা হয় নুরু সরদারের ছেলে আলম সরদারের মরদেহ। আজ সকাল ৯টার দিকে আনিচ মোল্লার আরেক ছেলে শাহিন মোল্লা, সাড়ে ৯টায় ইউসুফ আলী হাওলাদারের ছেলে বশর হাওলাদার এবং ১০টায় রহমান খানের ছেলে তারেক মোল্লার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত সবাই জেলা সদরের জৈনকাঠি গ্রামের বাসিন্দা।

 চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ হারুন পাশা বলেন, গভীরে সাগরে ড্রেজারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ আট শ্রমিকের সবার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সকাল ১০টার দিকে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মরদেহগুলো বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান বলেন, ড্রেজারডুবিতে নিখোঁজ সব শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আগে উদ্ধার হওয়া চারজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি চারজনের মরদেহও কিছুক্ষণ পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

জানা গেছে, মিরসরাই উপজেলার ১৬ নম্বর সাহেরখালী ইউনিয়নের নম্বর ওয়ার্ডের নম্বর বসুন্ধরা এলাকায় বেড়িবাঁধ থেকে হাজার ফুট গভীরে সাগরের মাঝে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সৈকত এন্টারপ্রাইজের বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন রাখা ছিল। ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মিরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল টিকে গ্রুপে বালু সরবরাহের কাছ করছিল।

গত সোমবার রাত ১০টার দিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সাগরের জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়ায় ওই স্থানে রাখা বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন সৈকত- ডুবে যায়। পরদিন মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রাম নগর থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের আট সদস্যের ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে।

ড্রেজার মেশিন সৈকত--এর ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আরও ছয়টি ড্রেজার রাখা ছিল। সতর্কসংকেত পেয়ে সব শ্রমিক নিরাপদ স্থানে চলে গেলেও সমুদ্রে সৃষ্ট ঢেউ বেশি থাকায় শ্রমিকদের আনার জন্য আমাদের নৌকা ড্রেজারের কাছে যেতে পারেনি। অবশেষে আজ সব শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

বেঁচে ফেরা শ্রমিক মো. সালাম জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে তীব্র বাতাস ঢেউ ওঠায় সৈকত- নামের তাঁদের ড্রেজারটি মিরসরাই উপকূলের সন্দ্বীপ চ্যানেলে ডুবে যায়। ওই সময় ড্রেজারটিতে থাকা জন শ্রমিকের মধ্যে আটজন আটকা পড়েন। শুধু তিনি কিনারে আসতে পেরেছিলেন।

 

 

 

 

আমাদের কাগজ/টিআর