সারাদেশ ২৫ অক্টোবর, ২০২২ ০৮:৩৬

চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

নিহতের পরিবারের আহাজারি

নিহতের পরিবারের আহাজারি

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার খোকসা ও পাংশা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় চোর সন্দেহে ফজল শেখ (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে সারা রাত খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে পাংশার মেঘনা গ্রামের কাচারিবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ফজল শেখ খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের সেনগ্রামের মৃত চৌধুরী শেখের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ভ্যান-সাইকেল মেরামতকারী ও দুই সন্তানের জনক।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠাই পুলিশ।

নিহতের স্ত্রী নার্গিস খাতুন জানান, রাত ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে কল পেয়ে ফজল বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর রাত ১টার দিকে বাড়িতে খবর আসে কাচারিবাড়িতে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করছে গ্রামবাসী। খবর পেয়ে স্ত্রী নার্গিস খাতুন দ্রুত কাচারিবাড়িতে যান। গিয়ে দেখি খুঁটিতে হাত-পা বাঁধা। এ সময় গুরুতর আহত অবস্থায় ফজল শুধু পানি পানি করছিলেন। গ্রামবাসী তাকে পানি বা চিকিৎসা দেয়নি। তার স্ত্রী তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলেও তাকে বাধা দেয়া হয়।

এরপর রাত ৩টার দিকে ফজলের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়লে স্ত্রী পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্বজনরা জানান, প্রায় ১০ বছর আগে পাংশার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মেঘনা গ্রামের ইরি শেখের স্ত্রী ও আব্দুল কাদের মোল্লার ছোট মেয়ে ইতি খাতুনকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন ফজল। আগের পক্ষের সাত বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। তারাই হয়তো ডেকে নিয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন।

মেঘনা গ্রামবাসী জানান, সোমবার রাতে এলাকার সামছুলের বাড়িতে কয়েকজন চোর অটোগাড়ির ব্যাটারি চুরি করছিল। এ সময় ফজলকে হাতেনাতে ধরে কাচারিবাড়িতে বেঁধে রেখে গণপিটুনি দেয়া হয়। হয়তো ভয়ে হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন।

নার্গিস খাতুন বলেন, 'ওই এলাকার আবু বক্কর, হোসেন, ইরি, সামছুলরা আমার স্বামীকে খুব মেরেছে। ওরা বারবার বলছিল: মেরে ফেল, মেরে ফেল। আমার স্বামী মেকানিক, চোর নয়। পরিকল্পিত এ হত্যার বিচার চাই।’ মঙ্গলবার মেঘনা গ্রামে সরেজমিন দেখা যায় স্তব্ধ পরিবেশ। অভিযুক্ত আবু বক্কর, হোসেন, ইরি, সামছুল পলাতক।

খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, মঙ্গলবার সকালে সেনগ্রামে নিজ বাড়ি থেকে ফজলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। চোর সন্দেহে এলাকাবাসী তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে জানা গেছে। পাংশা থানার ঘটনা। তাই মামলার কার্যক্রম তারাই করবেন। তবে ফজলের নামে কোনো চুরি বা অন্য কোনো মামলা নেই।


আমাদেরকাগজ/এইচএম