সারাদেশ ২৩ অক্টোবর, ২০২২ ০৬:৪৬

বগুড়ায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ৪ বন্ধুর মৃত্যুদণ্ড

বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ায় শিশু মাহি উম্মে তাবাচ্ছুমকে (৭) ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-২ এর বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা সবাই আদালতে উপস্থিত ছিল।

মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলো, বগুড়ার ধুনটের নশরতপুর গ্রামের মোজাম্মেলের ছেলে বাপ্পি আহম্মেদ (২৪), দলিল উদ্দিন তালুকদারের ছেলে কামাল পাশা (৩৭), ছানোয়ার হোসেনের ছেলে শামিম রেজা (২৪) এবং মৃত সাহেব আলীর ছেলে লাভলু শেখ (২৩)।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ধুনটের নসরতপুর গ্রামের বেলাল হোসেন খোকন ও তার স্ত্রী মরিয়ম ডেইজি ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। তাদের মেয়ে মাহি উম্মে তাবাচ্ছুম তার নানা আবদুস সবুরের বাড়িতে স্থানীয় পাঁচথুপি-নসরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর গ্রামের জান্নাতুল ফেরদৌস কবরস্থানে দুই দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের আয়োজন করা হয়। শিশু তাবাচ্ছুম তার দাদা ও শাশুড়ির সাথে প্রথম দিনের তাফসীর শুনতে যায়। রাত ১০টার দিকে সে মিষ্টি কিনতে পাশের দোকানে যায়। সেখানে খোকনের সাথে পারিবারিক বিরোধ থাকা কলেজছাত্র বাপ্পী আহমেদ তাফসিরে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করছিল।

বাপ্পী শিশু মাহী উম্মে তাবাচ্ছুমকে দেখতে পেয়ে প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করে। সে বাদাম কিনে দেয়ার প্রলোভনে তাবাচ্ছুমকে স্থানীয় হাজী কাজেম জুবেদা টেকনিক্যাল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানে বাপ্পী তার তিন বন্ধু কামাল পাশা, শামীম রেজা ও লাবলু শেখ পালাক্রমে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শিশু তাবাচ্ছুম নিস্তেজ হয়ে যায়। এ সময় বাপ্পী তাকে গলাটিপে হত্যা করে। পরে তাকে কোনো প্রাণি কামড়ে হত্যা করেছে এমন প্রমাণ করতে কাটিং প্লাস দিয়ে হাতের একটি আঙুল কেটে দেয়। এরপর লাশটি কাঁধে তুলে বাদশা মিয়ার বাঁশঝাঁড়ে ফেলে দেয়।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

পরদিন ১৫ ডিসেম্বর তাবাচ্ছুমের বাবা খোকন বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।


আমাদেরকাগজ/এইচএম