অপরাধ ও দুর্নীতি ২০ অক্টোবর, ২০২২ ০৬:১৭

যৌথবা‌হিনীর অভিযানে পিছু হটেছে ‘কেএনএফ’

নিজস্ব প্রতিবেদক: সামা‌জিক যোগা‌যোগমাধ্যম ফেসবুকে এক‌টি ভিডিও বার্তা দি‌য়ে নিজেদের পিছু হটার কথা জানিয়েছেন সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)’র এক নেতা। অন্যদিকে উগ্রবাদীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকায় এদের ধর‌তে পাহা‌ড়ে চিরুনি অভিযান চালা‌চ্ছে যৌথবা‌হিনী।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) বিকালে দুর্গম পাহাড়ের অজ্ঞাত স্থান থেকে দুই মিনিট ৫১ সেকেন্ডের এ ভিডিও বার্তা ফেসবুকে দেওয়া হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, পেছনে দুজন সশস্ত্র সদস্যকে পাহারায় রেখে কালো মুখোশ পরে সংগঠ‌নের নিজস্ব পোশাক প‌রি‌হিত অবস্থায় বক্তব্য দিচ্ছেন এক নেতা। তবে তিনি সংগঠনের কোন প‌দে র‌য়ে‌ছেন কিংবা তার নাম কি তা জানাননি। তি‌নি ব‌লেছেন, ‘আমা‌দের সঙ্গে উগ্রবাদী‌দের সম্পৃক্ততা নেই। তারপরও স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষয়ক্ষতির কথা চিন্তা করে যৌথবাহিনীর অভিযানের কারণে পিছু হটে‌ছি আমরা। সংগঠনের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশে যৌথবাহিনীর অভিযানের কার‌ণে আমাদের পিছু হটতে হয়েছে।’

এই নেতা আরও বলেন, ‘মূলত সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতি (জেএসএস মূল) কৌশলগতভাবে কেএনএফের বিরুদ্ধে উগ্রবাদের অভিযোগ তু‌লে নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিযানে নামিয়েছে। অথচ পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টি করে চলেছে জনসংহতি সমিতি। তারা বাঙালিসহ বহু জাতি-গোষ্ঠীর মানুষকে হত্যা করে পাহাড়কে অশান্ত করে তুলেছে।’

কারা এই কেএনএফ ?

কেএনএফ হলো পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন; যা কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট হিসেবে পরিচিত। বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির কয়েকটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছে কেএনএফ। চলতি বছরের এপ্রিলে আত্মপ্রকাশ করে ফেসবুকে নিজেদের অবস্থান জানান দেয়। সেইসঙ্গে সাংগঠনিক প্রধান হিসেবে নাথান বমের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল।

এদি‌কে, রুমা ও রোয়াংছড়ির বি‌ভিন্ন এলাকায় পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বৃদ্ধি পাওয়ায় সোমবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকে পর্যটক‌দের সরিয়ে নেওয়া হয়। একইসঙ্গে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনার জন্য মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) থেকে দুই উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করে উপজেলা প্রশাসন।

রোয়াংছ‌ড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোর‌শেদ আলম বলেন, ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য রোয়াংছ‌ড়িতে পর্যটক‌দের ভ্রম‌ণে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। কত‌দিন পর্যন্ত অভিযান চলবে তা আমাদের জানায়নি যৌথবাহিনী। ত‌বে সন্ত্রাসী‌দের আনাগোনা ক‌মলে আবারও পর্যটকদের জন্য উপজেলায় যাতায়াত সচল করে দেওয়া হবে।’

বান্দরবান ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নকিবুল হাসান বলেন, ‌‘রুমা ও রোয়াংছড়ির পাহাড়ি এলাকায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান প‌রিচালনা কর‌ছে যৌথবা‌হিনী। এ কার‌ণে এসব এলাকা ভ্রমণে পর্যটক‌দের নিরুৎসাহিত করেছে উপজেলা প্রশাসন। প‌রি‌স্থি‌তি স্বাভা‌বিক হ‌লে আবারও এসব এলাকায় পর্যটকরা যে‌তে পার‌বেন।’

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, ‘যৌথবাহিনী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকায়। ফলে নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে রুমা ও রোয়াংছড়িতে পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে। তবে স্থানীয়দের জন্য চলাচল উন্মুক্ত রয়েছে।’

আমাদের কাগজ//জেডআই