শিক্ষা ১৫ অক্টোবর, ২০২২ ০৫:১২

ইডেনে সাংবাদিক প্রবেশ: ছাত্রলীগ নেত্রীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

ইডেন মহিলা কলেজে নিয়ম-কানুন ভেঙ্গে ক্যাম্পাসে সাংবাদিক প্রবেশ করানোর অভিযোগে সুস্মিতা বাড়ৈ নামে এক ছাত্রীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাস প্রশাসন। নোটিশ পাওয়া সুস্মিতা বাড়ৈ ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সদ্য স্থগিত কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন।

নোটিশে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও সংঘর্ষকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা উল্লেখ করে ভেতরে সাংবাদিকদের আসতে দেওয়ায় তার সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগ এনে কেন আবাসিক হলের সিট বাতিল করা হবে না জানতে চেয়ে সন্তোষজনক লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে।

শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাসের তত্ত্বাবধায়ক নাজমুন নাহারের স্বাক্ষরিত এ নোটিশে বলা হয়, কলেজে গত ২৪ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে ও ২৫ সেপ্টেম্বর সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার হলের সিট কেন বাতিল করা হবে না তার সন্তোষজনক লিখিত জবাব হল কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিলের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।

রোববার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টার মধ্যে লিখিত জবাব জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়। তবে শুধু একজনকেই নয় বরং অন্যান্যদের কাছেও কারণ জানতে চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ছত্রীনিবাসের তত্ত্বাবধায়ক নাজমুন নাহার।

তিনি বলেন, হলের কিছু নিয়ম-কানুন আছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাতে কোনো মেয়ে হল থেকে বের হতে পারবে না। আগের ঘটনায় আমরা প্রেসিডেন্ট (তামান্না জেসমিন রিভা), সেক্রেটারিকে (রাজিয়া সুলতানা) কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। শুধু তারা নয়, যে কেউ শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করলে আমরা শোকজ নোটিশ দিই। কোনো কোনো সময় মৌখিকভাবেও বলা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুস্মিতা বাড়ৈ গণমাধ্যমকে বলেন, কলেজে সাংবাদিক প্রবেশ করানোর বিষয়ে আমার মোটেও সম্পৃক্ততা নেই। আমি কারণ দর্শানোর নোটিশের লিখিত জবাব দিয়েছি। যে ঘটনার সাথে আমি সংশ্লিষ্ট নই সে বিষয়ে কিছু বলার নেই।

তদন্ত কমিটির অভিযোগ: 

>> ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে কলেজের ২নং মূল গেটের তালা জোরপূর্বক খুলে কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সাংবাদিকদের কলেজে প্রবেশ করিয়েছেন।

>> ২৫ সেপ্টেম্বর ২নং ও ৩নং গেট দিয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সাংবাদিক কলেজে প্রবেশ করিয়েছেন।

>> একই দিন হল থেকে ছাত্রীদের বের হতে বাঁধা প্রদান করেছেন।

>> হলের দারোয়ানের কাছ থেকে চাবির গোছা নিয়ে ফেলে দিয়েছেন।

>> ছাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের মোবাইল কেড়ে নিয়েছেন।

গত ২২ সেপ্টেম্বর ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রীভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে ‘সিট বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির’ অভিযোগ এনে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস। এ কারণে তাকে ছাত্রীনিবাসের একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর করার অভিযোগ ওঠে।

এ ঘটনায় মধ্যরাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একাংশের বিক্ষোভে ইডেন কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা রীভা ও রাজিয়ার বহিষ্কারের দাবি জানান। পরে রোববার দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ আসে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে।

তদন্ত কমিটির প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিরোধী পক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পরে বিকেলে সভাপতি রিভা সংবাদ সম্মেলন করতে এলে আবারও সংঘর্ষে জড়ায় দুইপক্ষ। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন।

এ সব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ ছাত্রলীগের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

আমাদের কাগজ/ ইদি