আন্তর্জাতিক ৮ অক্টোবর, ২০২২ ০৫:০৮

ব্রিটেনজুড়ে ব্ল্যাকআউট আতঙ্ক

আসছে শীতে ব্রিটেন ব্ল্যাকআউটের কবলে পড়তে পারে বলে শঙ্কা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে জনসাধারণ যেন শীতের সময়টায় তাদের গৃহস্থালী গ্যাস-বিদ্যুতের ব্যবহার কম ক‌রেন, সেজন্য একটি পাবলিক ইনফরমেশন ক্যাম্পেইন চালুর বিষয়ে মন্ত্রীরা আলোচনা করছেন বলে ‌জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম বি‌বি‌সি।

বাণিজ্য বিভাগ, জ্বালানি কোম্পানি এবং নেটওয়ার্ক অপারেটর ন্যাশনাল গ্রিডের মধ্যে পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে রয়েছে পরিবারগুলো তাদের থার্মোস্ট্যাটগুলো বন্ধ করে দিতে এবং রাতের বেলা ও মাঝে মাঝে গ্যাস বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে সেসময় ডিশওয়াশার-ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করতে উৎসাহিত করা হতে পারে।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এসেছে, কর্মকর্তারা ন্যাশনাল গ্রিডের মাধ্যমে পরিচালিত একটি সার্ভিসের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেছেন যা ভোক্তাদের বিদ্যুৎ চলে গেলে একটি টেক্সট, ফোন কল বা ইমেলের মাধ্যমে সতর্ক করতে ব্যবহার হয়। বিদ্যুৎ ব্যবহার কমানো নিয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সেবাটি কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যখন কোনও ত্রুটি বা বিভ্রাট শনাক্ত হয়, তখন এই সিস্টেমটি গ্রাহকদের অবহিত করে এবং নিশ্চিত করে যে কখন বিদ্যুৎ পুনরায় সরবরাহ হবে।

এ আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলেছে, জনসাধারণের বাড়িতে গ্যাস বিদ্যুতের সরবরাহ কোনও অবস্থাতেই ব্যাহত না হয়, এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা এবং শিল্প কারখানার নির্বাহীরা ব্ল্যাকআউট এড়াতে বদ্ধপরিকর। তাই একটি পাবলিক ইনফরমেশন ক্যাম্পেইন অর্থাৎ জনগণকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে শীতকালে জ্বালানি শক্তি সরবরাহের ওপর চাপ কমাতে সহায়তা করবে।

মন্ত্রীরা এখন পর্যন্ত ভোক্তাদের তাদের শক্তির ব্যবহার কমানোর আহ্বান প্রত্যাখ্যান করলেও, তারা বলছেন গ্যাস ও বিদ্যুতের ব্যবহার ‘যে কারও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত’।

এনার্জি নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফগেম বলেছে, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আসন্ন শীতে গ্যাসের ঘাটতির একটি ‘উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি’ রয়েছে। কারণ শীতের আগেই ইউরোপে গ্যাসের মজুদ উল্লেখ্যযোগ্যভাবে কমে গেছে।

সরকারি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ব্রিটেনে গ্যাসের ঘাটতি থাকলে এবং শীতে আবহাওয়া গুরুতর হলে জানুয়ারিতে চার দিনের জন্য বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হতে পারে।

যদিও ইউরোপীয় দেশগুলো গ্যাস স্টোরেজ সুবিধা পূরণ করতে এবং ব্যবহার কমানোয় বেশ অগ্রগতি করেছে, তবে আগামী বছরের মধ্যে সরবরাহ এবং উচ্চ মূল্য নিয়ে উদ্বেগ রয়েই গেছে।

গত সপ্তাহে, বাল্টিক সাগরের নীচে নর্ড স্ট্রিম রাশিয়ান গ্যাস পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর সঙ্গে মস্কোরই হাত রয়েছে বলে অভিযোগ ইইউ'র। ইউরোপীয় সরকারপ্রধানরা জার্মানির কিছু অংশে গরম পানির ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং গরম পোশাক পরাসহ খরচ কমাতে ভোক্তাদের কাছে বার্তা পাঠানোর চেষ্টা করছে ফ্রান্স।

বাণিজ্যমন্ত্রী জ্যাকব রিস-মগ, দীর্ঘমেয়াদী সরবরাহ চুক্তির জন্য দুটি গ্যাস রফতানিকারক দেশ, কাতার এবং নরওয়ের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করছেন। এর ফলে যুক্তরাজ্যকে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিপুল পরিমাণে গ্যাস কিনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করবে। এদিকে আগামী শীতে তাদের কয়লাভিত্তিক কার্যক্রমকে স্ট্যান্ডবাই রাখার জন্য ড্র্যাক্স এবং ইডিএফসহ পাওয়ার জেনারেটরগুলোর সঙ্গে সরকার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।