সোশ্যাল মিডিয়া ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১০:১৪

বৃষ্টিতে নেচে ভাইরাল হওয়া সেই যুবকের সংগ্রামের গল্প

ডেস্ক রিপোর্ট।।

সোমবার হঠাৎ ফেসবুকে ভাইরাল হয় রাস্তায় এক যুবকের উদ্দাম নাচ। রাজধানী পল্টনে বৃষ্টির মাঝে মনের আনন্দে নেচে চলছে এক যুবক। ভর দুপুরে রাস্তায় এক যুবকের এমন নিঃসঙ্কোচ চিত্তে সাবলিলভাবে নাচ করার দৃশ্য দেখে অনেকে অবাক হয়েছেন। কেউ কেউতো রীতিমত পাগলও ভেবে বসেন।

তবে যে যাই ভাবুক এই যুবকের নাচ সবার দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে। ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকেও। কিন্তু এই যুবক মোটেই জানতেন না তার এই নাচ ভিডিও করছে কেউ। মিলন হাসান নামে এক যুবক এই নাচের দৃশ্যটি ভিডিও করে ফেসবুকে প্রথম ছাড়ে। আর মুহূর্তেই ছড়িয়ে পরে সেই ভিডিও। শুধুমাত্র মিলন হাসানের ওয়াল থেকেই চার লাখ মানুষ দেখেছে এই ভিডিও। শেয়ার করেছে সাড়ে ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। 

কিন্তু তার পরিচয়টা অন্তরালেই ছিলো। এবার জানা গেলো সেই যুবকের পরিচয়। যারা তাকে সত্যিই পাগল ভেবে ছিলেন তাদের জন্য চমকের খবর হচ্ছে এই যুবক পাগল নয়, রীতিমত জীবন যুদ্ধে সংগ্রাম করা যাওয়া এক যোদ্ধা। তার নাম কাজল। একজন উদ্যমী যুবক ও জীবন সংগ্রামে সততার সাথে লড়াই করা মুখ হিসেবে কাজলের পরিচিতি আছে এলাকায়। প্রাণ-প্রাচুর্যে এই যুবকের মুখে যেন কোনো মলিনতার ছবি নেই। সব সময় হাসি ঠাট্টা দুষ্টামিতে মেতে থাকেন। অথচ পিতৃ-মাতৃহীন এতিম কাজল একটু একটু করে লড়াই করে গড়ে তুলেছেন ছোট দুটি দোকান। এটাই তার আয়ের উৎস্য। কাজল থাকেন রাজধানীর পল্টন এলাকায়। সেখানেই তার নিজ চেষ্টায় গড়ে তোলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

 

এই এলাকার বাসিন্দা ফাহাদ আহমেদ শিকদার আজ ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়ে কাজলের পরিচয় তুলে ধরেন। ফাহাদ নিজেও একজন তরুণ উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী। ফাহাদ জানালেন বৃষ্টিতে নেচে ভাইরাল হওয়া যুবক কাজল কাকরাইল পল্টন এলাকার বাসিন্দাদের কাছে এক অতি পরিচিত মুখ। এলাকার সবার সাথেই রয়েছে তার সখ্যতা ও ভালোবাসার সম্পর্ক। ছোট বড় সবারই বন্ধু কাজল।

ফাহাদ বলেন, ‘কাজল আমার বন্ধু। শুধু আমার না এলাকার আমার সিনিয়র ভাইদেরও আবার জুনিয়রদেরও বন্ধু। কাজলের সাথে নিয়মিতই আড্ডা হয় দেখায় হয়। যখন ভিডিওটি ধারন করা হয় সে কিন্তু তা জানতো না। সে নিজের আনন্দেই নেচে যাচ্ছিলো। এমনই মজার মানুষ। সবার সাথেই সে মজা করে। কিন্তু তার আছে একটা সংগ্রামের গল্প।  

 
ফরহাদ লিখেন, ‘সবাই হয়তো সেদিনের ভিডিওটি দেখে ভেবেছে ও বেকার,পাগল বা রাস্তার কোন ছেলে। কিন্তু আপনারা জেনে অবাক হবেন যে কাজল একজন এতিম হয়েও নিজের চেষ্টায় ও একটা লন্ড্রি করেছে, একটা ছোট ফাস্টফুড এর দোকান করেছে। নাইট স্কুলে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। হয়তো ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু করবে।

ও আসলেই আমাদের জেনারেশনের জন্য একটা ইন্সপিরেশন। হয়তো ও লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক না। কিন্তু এখনকার জেনারেশনের অনেক ড্যাম স্মার্ট-কুল-ডুডদের চেয়ে ভালো। নিজের চেষ্টায় একবারে শুন্য থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত এসেছে।

একবার ও অসুস্থ হয়ে গেলো, হাসপাতালে ভর্তি, অপারেশন করা লাগবে। পুরো এলাকা ওর চিকিৎসার জন্য টাকা উঠাল, জুম্মার মোনাজাতে ওর জন্য দোয়া করা হল, হাসপাতালে ছোট বড় সবার ভিড়। আল্লাহর রহমতে ও সুস্থ ও হল। দোয়া করি যাতে ও আরো উন্নতি করুক।’