ডেস্ক রিপোর্ট
আগরতলার ঊনকোটি জেলার ফটিকরায় এলাকার গকুলনগর গ্রামের এক গৃহবধূ মিঠু চক্রবর্তী। মাশরুম চাষ করে নিজের পরিবারের অভাব-অনটন দূর করে আজ স্বাবলম্বী এ নারী উদ্যোক্তা।
মিঠু চক্রবর্তীর পরিবারে স্বামী, শ্বশুর ও দুই ছেলে রয়েছে। পরিবারের আর্থিক অনটন দূর করার জন্য প্রথমে তিনি সেলাইয়ের কাজ শুরু করেন। সেলাই করে যা রোজগার হতো, তাতে পরিবার চলতো না। পরে ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর ত্রিপুরা সরকারের তরফে ঊনকোটি জেলার কুমারঘাটে মাশরুম চাষের ওপর ১৩ দিনের এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রশিক্ষণ নেন মিঠু।
প্রশিক্ষণ শেষে তার হাতে মাশরুম বীজের দু’টি প্যাকেট তুলে দেওয়া হয়। এরপর তিনি বাড়িতে মাশরুম চাষ করতে শুরু করেন। প্রথমবারেই সফলভাবে মাশরুম উৎপাদন করতে পারায় নিজের সঞ্চিত প্রায় পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে বিনিয়োগ করে আরেকটু বড় আকারে চাষ শুরু করেন তিনি।
তারপর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রথমদিকে উৎপাদিত মাশরুম স্থানীয় বাজারে বিক্রি করলেও তা এখন আগরতলার বাজারে বিক্রি করেন মিঠু। এখন প্রতিদিন তার খামারে গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ কেজি মাশরুম উৎপাদিত হয় এবং প্রতি কেজি মাশরুম ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা করে পাইকারের কাছে বিক্রি হয়। প্রতিদিন গড়ে তার ছয় হাজার টাকা আয় হয়, অর্থাৎ মাসিক আয় অন্তত ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
মিঠু জানান, প্রথমে বাড়িতে ছোট একচালা ঘরে মাশরুম চাষ শুরু করলেও এখন এর জন্য আলাদা ঘর তৈরি করেছেন। এখন তার খামারে ছয়জন কাজ করেন। তাদের মধ্যে তিনজন নারী এবং তিনজন পুরুষ।
মিঠুর পরিবারে এখন আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে। তার বড় ছেলে কলেজে পড়ছেন এবং ছোট ছেলে এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে।
এদিকে, মাসে দুয়েকদিন মাশরুম তেমন বিক্রি হয় না বলে সেগুলো দিয়ে আচার তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছেন মিঠু। তিনি জানান, ‘ত্রিপুরা লাইভলিহুড মিশন’ থেকে তিনি বিভিন্ন ধরনের আচার তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। ফলে এখন নানা ধরনের আচার তৈরি করতে পারেন তিনি। সম্প্রতি তার মাশরুমের খামার পরিদর্শন করেন ত্রিপুরা লাইভলিহুড মিশনের কর্মকর্তারা। তাদের পরামর্শেই বিক্রি না হওয়া মাশরুম দিয়ে আচার তৈরি শুরু করেন তিনি।
অন্যদিকে, সেলাইয়ের কাজটিও ছেড়ে দেননি মিঠু। গ্রামের মেয়েদের দিয়ে সেলাইয়ের কাজ করাচ্ছেন বলেও জানান সফল এ নারী উদ্যোক্তা।
সূত্রঃ বাংলানিউজ