সারাদেশ ১১ মার্চ, ২০২১ ১১:০৪

যে কারণে চাকরি হারালেন ভূমি কর্মকর্তা

ডেস্ক রিপোর্ট

সরকারি খাসজমি ব্যক্তির নামে রেকর্ড করায় ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় কর্মরত সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. মাহবুব আনোয়ারকে চাকরি থেকে অপসারণ করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

একই সঙ্গে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী তাকে অদক্ষতা, অসদাচরণ, দুর্নীতির অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

সম্প্রতি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে এক আদেশ জারি করে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, মাহবুব আনোয়ার ‘স্ট্রেংদেনিং অ্যাক্সেস টু ল্যান্ড প্রপার্টি রাইটস ফর অল সিটিজেনস অব বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় জরিপ কার্যক্রম চলাকালে জামালপুরের দুবারিয়া মৌজায় ০ দশমিক ২৮ একর খাস জমি ব্যক্তিমালিকানায় রেকর্ড করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। মেষ্টা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জামালপুরের সহকারী কমিশনারের (ভূমি) এই অভিযোগ জানিয়ে আবেদন দাখিল করেন। সরকারি সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড হওয়ায় সরকারের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে ২০১৭ সালের ২৯ জুন সহকারী কমিশনার (ভূমি) জামালপুরের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসারকে জানান। এ প্রেক্ষিতে জামালপুর সদরের সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।

দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, তার (মাহবুব আনোয়ার) কার্যক্রমে সরকারের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয়েছে এবং আগের রেকর্ডীয় খাসজমি আপত্তি পক্ষগণকে শুনানি দিয়ে সরকার পক্ষে রেকর্ড দেওয়ার পরও তিনি অবৈধ অনিয়মতান্ত্রিক ও বিধি বহির্ভূতভাবে সরকারি খাস খতিয়ানের জমি ব্যক্তিমালিকানায় রেকর্ড দিয়েছেন। তিনি আপিল শুনানির সময় ০ দশমিক ২৮ একর এক নম্বর খতিয়ানভুক্ত রেকর্ডকৃত জমি ডিজিটাল জরিপের আপত্তি পর্যায় পর্যন্ত সরকারের নামে অন্তর্ভুক্ত থাকার পরও শুধু ৪৮১/১৭ আপিল মামলার মাধ্যমে ব্যক্তির নামে অবৈধভাবে রেকর্ড করিয়ে দেন।

আদেশে আরও বলা হয়, তার এই কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ অনুযায়ী কেন তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হবে না বা একই বিধিমালা উপযুক্ত শাস্তি আরোপ করা হবে না—এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়। তিনি (মাহবুব আনোয়ার) এর লিখিত জবাব দেন এবং ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নেন। পরে ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. তাজুল ইসলাম মিয়াকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে মাহবুব আনোয়ারকে দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব, তদন্ত প্রতিবেদনসহ সার্বিক পর্যালোচনার পর মাহবুব আনোয়ারকে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনি প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হওয়ায় এ বিষয়ে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মতামত চাওয়া হয়। মতামতে সরকারি কর্ম কমিশন তাকে চাকরি থেকে অপসারণের বিষয়ে একমত পোষণ করে। তাই ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ অনুযায়ী সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মাহবুবকে অদক্ষতা, অসদাচরণ, দুর্নীতির অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হলে, তাকে একই বিধি মালার বিধি মোতাবেক চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশও দেওয়া হয়।